ভারতে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক ক্রিকেটের মহারণ ক্রিকেট বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ চিরচেনা আফগানিস্তান। ওপেনিং জুটি বাদে আফগানদের ব্যাটিংয়ে বলার মতো কিছুই নেই। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসানের ঘূর্ণিতে কুপোকাত আফগানিস্তান। ১৫৬ রানে অলআউট হয়েছে তারা। সাকিব ও মিরাজ দুজনই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট।
সকাল ১১টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অবশ্য বোলিং নিয়ে প্রথমে সুবিধা করতে পারছিল না বাংলাদেশের বোলাররা। দুই ওপেনার গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাটে ভালো শুরু আসে আফগানিস্তানের। তবে ৪৭ রানের জুঁটিটি ভেঙ্গে টাইগার ক্যাম্পে স্বস্তি আনেন সাকিব আল হাসান।
সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব আল হাসান প্রথম ওভারে কিছু করতে না পারলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন, ছিল বাড়তি বাউন্স। সুইপের চেষ্টা করেছিলেন ইব্রাহিম, তবে টপ-এজে ক্যাচ গেছে ডিপ স্কয়ার লেগে। বাংলাদেশ পেয়েছে প্রথম উইকেট, নবম ওভারে। ইব্রাহিম থেমেছেন ২৫ বলে ২২ রানে, আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি ভাঙে ৪৭ রানে।
এরপর রহমত শাহকে নিয়ে রানের চাকা ঘুরাচ্ছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। দুজনে মিলে ৩৬ রানের জুটি গড়ার পর পানি বিরতি দেয়া হয়। সেই জুটি ভাঙেন সাকিব। এবার সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্রিজের ভেতরই লিটন দাসকে ক্যাচ দেন রহমত। ২৫ বলে ১৮ রান করেন আফগান ব্যাটার।
সাকিবের জোড়া শিকারের পর ১৪ রানের মধ্যে আফগানদের চার উইকেট নেওয়া থেকে শুরু করে বাকি ম্যাচজুড়ে ছিল টাইগার বোলারদের দাপট।
শুরুটা করেছিলেন সাকিবই নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথমেই একসময় পাঁচের উপরে রান তোলা আফগানদের রানরেট নামিয়ে আনেন সাড়ে চারে। এরপর প্রথমে আঘাত হানেন মিরাজ। উইকেটে এসে ধীর গতির শুরু করেছিলেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তার এমন ব্যাটিংয়ের প্রভাব পড়েছিল দলের রান রেটের ওপরও। সেটা অধিনায়ক হয়তোবা বুঝতে পেরেছিলেন। তাইতো ২৫তম ওভারে মিরাজের ওপর আক্রমণ করতে গেলেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হলো না। উল্টো দলের বিপদ বাড়ালেন নিজের উইকেট হারিয়ে। ১৮ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
ইনিংস ওপেন করতে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। শুরুতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন। স্পিনার কিংবা পেসার সবার বিপক্ষেই সাবলীল ছিলেন তিনি। তবে ২৬তম ওভারে মুস্তাফিজকে খেলতে গিয়ে তামিমের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
এরপর নতুন আসা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে থিতু হতে দিলেন না সাকিব। এই বাঁহাতি স্পিনারের সোজা বলে লাইন মিস করেছেন নাজিবুল্লাহ। খানিকটা নিচু হওয়া বলে টার্নের আশায় ব্যাট চালিয়ে ছিলেন এই ব্যাটার, আউটসাইড এডজে বল স্টাম্পে আঘাত হানে। ৫ রান করা নাজিবুল্লাহকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করলেন সাকিব।
এরপর সাকিব বোলিংয়ে তাসকিনকে ফেরান। তাসকিন এসে ফেরালেন মোহাম্মদ নবীকে। পিচে পড়ার পর একটু ভেতরের দিকে ঢোকা বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন নবি। ইনসাইড-এজে হয়েছেন বোল্ড।
নবী আউট হওয়ার পর রশীদ ও আজমতউল্লাহ ম্যাচে আফগানদের ফেরানোর চেষ্টা করেন তবে লাব হয়নি। মিরাজ নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান রশীদকে বোল্ড করে। ২০ বলে ২২ রান করা আজমতউল্লাহ ফেরেন এর পর। শরিফুল ইসলামের বলে ইনসাইড এজ হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তখন আফগানদের দলীয় রান ১৫৬। স্কোর বোর্ডে রানসংখ্যা স্থির থাকতেই মুজিবকে ফেরান মিরাজ। নাভিন উল হক শেষ ব্যাটার হিসেবে তাওহীদের হাতে ক্যাচ দিয়ে আফগান ইনিংসের ইতি টানেন।
৪৬ রানে আফগানদের শেষ আট উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। সাকিব ও মিরাজ তিনটি করে উইকেট এবং শরীফুল নেয় ২টি। তাসকিন ও মুস্তাফিজ নেয় একটি করে উইকেট। বোলাররা তাদের কাজ ভালোভাবে করেছে এখন পালা ব্যাটারদের।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র, সহ-সম্পাদক: সুব্রত দেবনাথ, নির্বাহী সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী, বার্তা সম্পাদক : শহীদুর রহমান জুয়েল। ঢাকা-১২৩০ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।