দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। তবে কবে থেকে সেনা মোতায়েন হবে তা আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
রোববার সকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। সিইসির সঙ্গে বঙ্গভবনে তিনিও উপস্থিত ছিলেন।
ইসি সচিব বলেন, বেলা ১১টায় সিইসি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এর বিষয়বস্তু ছিল ভোটে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহায়তাগ্রহণ সম্পর্কিত অনুরোধ। সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সিইসি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতির কাছে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছেন। রাষ্ট্রপতি বিষয়টি শুনেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।
সময়সীমা ১৩ দিনই বহাল থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় কখন কীভাবে নিয়োজিত হবে, তাদের টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন কী হবে সেটা সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগে সঙ্গে ইসি পত্রালাপাপের মাধ্যমে চূড়ান্ত করবে।
তিনি আরও বলেন, একটা আলোচনা হয়েছিল অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে নিয়োজিত থাকবে তার সঙ্গে সমন্বয় করে যাতে তারা দায়িত্ব পালন করতে পারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট সময়টি পরে জানানো হবে। ১৩ দিন চূড়ান্ত না। আমরা আলোচনা করে ঠিক করে নেব।
তবে ১১ ডিসেম্বর সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ইসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন করতে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ১৩ দিন সেনাবাহিনী মোতায়নের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশে পদাধিকার বলে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। ফলে সারা দেশে নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েনের মতো বড় সিদ্ধান্তে তার অনুমতি আনুষ্ঠানিকভাবে নিতে হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণার আগে গত ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা। সে সময় নির্বাচনের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা তাকে অবহিত করেন সিইসি।
এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থিতার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন রোববার। বৈধ প্রার্থীরা এদিন বিকেল ৪টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন।
রাজনৈতিক দলগুলোকে এ সময়ের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে তাদের চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানিয়ে দিতে হবে। কোনো দল তার দলীয় প্রতীক জোটভুক্ত দলের কোনো প্রার্থীর অনুকূলে বরাদ্দ দিতে চাইলেও সেটা এ সময়ের মধ্যে করতে হবে। আর প্রার্থীদের প্রতীক বিতরণ হবে সোমবার।
এ নির্বাচনে ইসির আপিল শুনানি কার্যক্রম শেষে নির্বাচনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ২৬০ জন। তবে মোট কত প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকছেন তা নির্ধারণ হবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর। নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী ভোট গ্রহণের তিন সপ্তাহের আগে কোনো প্রার্থী, দল বা তার পক্ষে কেউ নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। ফলে সোমবার থেকে নির্বাচনি প্রচারণার পথ উন্মুক্ত হচ্ছে।
তফসিল অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। আর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র, সহ-সম্পাদক: সুব্রত দেবনাথ, নির্বাহী সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী, বার্তা সম্পাদক : শহীদুর রহমান জুয়েল। ঢাকা-১২৩০ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।