কিশোর কুমার দত্ত, লক্ষ্মীপুর:
ফিলিপাইন তরুণী জোয়ান ডিগুসমান লেগুমবাই (২৯)। তাঁর দেশ ভিন্ন, ভাষাও আলাদা। এমনকি বড়ও হয়েছেন ভিন্ন সংস্কৃতিতে। এসব কিছুর অমিল থাকা সত্ত্বেও গেল বছর প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে প্রেমিক মো. নাঈমুর রশিদের লক্ষ্মীপুরের বাড়িতে ছুটে আসেন এ তরুণী। তারপর তরুণীর মা বাবার সম্মতিতে তাঁকে বিয়ে করেন নাঈমুর। শহরের একটি রেস্তোরাঁয় তাঁদের বিয়ে সম্পূর্ন হয়েছে। তাদের প্রেম চলাকালিন সময়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এ তরণী। নিজের নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন নাজিফা রশিদ আমিরা। মো. নাঈমুর রশিদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী গ্রামে এবং সে গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাঈমুর রশিদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নাজিফা রশিদ আমিরা বাঙালিদের মতোই এখন তার চলাফেরা, খাবার ও পোশাক। এমনকি কিছুটা বাংলা ভাষায় কথাও বলছেন তিনি। জেলা সদরের হামছাদী গ্রামের গৃহবধূ নাজিফা স্বামী-সংসারের জন্য ছেড়েছেন পরিবার-পরিজন এবং ধর্ম। এখন স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি আর ৩ মাস বয়সী একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়েই কাটছে তার সময়।
জানা যায়, দুই দেশের দূরত্ব তিন হাজার ৫১৪ কিলোমিটার। দুজনের ভাষাও ভিন্ন। সংস্কৃতিও আলাদা। তবে এসব কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াইনি দুজনের চার হাত এক হতে। ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি ফিলিপাইনের তরুণী ডিগুসমান লেগুমবাইয়ের (নাজিফা) সঙ্গে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদের মালয়েশিয়া প্রবাসী পুত্র মো. নাইমুর রশিদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে ছিল জমকালো আয়োজন। এর আগে মালয়েশিয়ার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় নাইমুরের সঙ্গে পরিচয় হয় ফিলিপাইনের আরনেসতা লেগুমবাই ও ইমেলদা লেগুমবাই দম্পতির মেয়ে জোয়ান ডিগুসমান লেগুমবাইনের (নাজিফা)। পরিচয় থেকে শুরু হয় তাদের প্রেম। আর সেই প্রেমের টানে বাংলাদেশে নাইমুরের বাড়িতে আসেন নাজিফা। এখানে নিজের নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন নাজিফা রশিদ আমিরা। এ দম্পতির সংসারে নুর মোহাম্মদ নিহাল নামে ৩ মাস বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে। শিশু সন্তানকে লালন-পালনের পাশাপাশি করছেন সংসারের রান্না-বান্নার কাজও। এ দম্পতি বিশ^ ভালবাসা দিবসকে ঘিরে গোলাপ ফুলের মাধ্যমে একে-অপরকে জানিয়েছেন নিজেদের ভালবাসার কথাও।
প্রেম ও সংসার জীবন নিয়ে নাইম-নাজিফার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এ সময় সুখেই সংসার করছেন বলে তারা জানান, বিয়ের কিছু দিন পর দুইজনে ফিরে যান ফিলিপাইনে। সেখানে সন্তান জন্ম হওয়ার পর আবারও ফিরেন বাংলাদেশে। তবে, ভিনদেশেই প্রতিষ্ঠিত হতে চান নাইম।
সবার সাথে মিলেমিশে সংসার জীবন কাটাচ্ছেন নাজিফা। নাইম-নাজিফার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে দোয়া চেয়েছেন স্বজনরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত ২ বছরে ভিনদেশী অন্তত ৮ জন তরুণী লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। তাদের মধ্যে ইতালি থেকে খাদিজা বেগম, নেপাল থেকে জ্যেতি, ইন্দোনেশিয়া থেকে ফানিয়া আইয়প্রেনিয়া, সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে সারলেট, ইন্দোনেশিয়া থেকে সিতি রাহাইউ সহ ৮ জন।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র, সহ-সম্পাদক: সুব্রত দেবনাথ, নির্বাহী সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী, বার্তা সম্পাদক : শহীদুর রহমান জুয়েল। ঢাকা-১২৩০ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।