আল মামুন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলার বেশিরভাগ মানুষের একমাত্র পেশা কৃষি, কৃষিই একমাত্র আয়ের উৎস, এ অঞ্চলের জমি উর্বর হওয়ায় কৃষকরা ধান, সরিষা, তরমুজ, ভুট্টা, আলু, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, শিম ও বিভিন্ন জাতের রবিশস্য উৎপাদন করে থাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বেপরোয়া ভাবে চলছে ট্রাক্টর নামক ট্রলি। এসব অবৈধ যানের অবাধ চলাচলের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে রাস্তাঘাট, পরিবেশ ও জনজীবন।
ছোট-বড় দূর্ঘটনাসহ বাড়ছে মৃত্যু। চাষাবাদের জন্য কেনা ট্রাক্টর দিয়ে বানানো হয়েছে এসকল ট্রাক বা ট্রলি। যা ব্যবহৃত হচ্ছে ইট, মাটি ও বালি টানার কাজে। লাইসেন্সবিহীন শিশু-কিশোর চালক দিয়ে চালানো হচ্ছে যত্রতত্র। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।
জানা যায়, দেশের কৃষি উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করার জন্য এসব ট্রাক্টর বিদেশ থেকে আমদানির সুযোগ দিচ্ছে সরকার। সরকারি সুযোগ পেয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অবাধে আমদানি করে এসব ট্রাক্টর বিক্রি করে শিল্প, মাটি-বালু, ইটভাটার মালিকসহ পরিবহণ ব্যবসায়ীদের কাছে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত এসব ট্রাক্টরের চালকদের জন্য কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন না থাকায় পরিবহণ ব্যবসায়ীরা স্বল্পমূল্যে সহজেই কিনে আনেন এসব ট্রাক্টর। কিন্তু কৃষিকাজের পরিবর্তে পরিবহণ কাজে ব্যবহার করায় গ্রাম ও শহরে ব্যাপক হারে বেড়েছে ট্রাক্টরের সংখ্যা। এছাড়াও ট্রাকের চাইতে ট্রাক্টরের ভাড়া কম থাকায় এই বাহনের চাহিদাও বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
সরেজমিনে ঘিওর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এসব ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট বিনষ্ট হচ্ছে। ধুলাবালির কারণে সড়কের দুই পাশে থাকা বাড়ি ও গাছপালা ধুলায় তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আসবাবপত্র। অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক কৃষিজমির টপসয়েল, ইট ও বালি ভর্তি ট্রলি বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে এবং ১৪ থেকে ১৮ বছরের শিশু-কিশোররাই বেশি চালাচ্ছে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা শব্দে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ট্রাক্টরে দুর্ঘটনায় একাধিক লোকের নিহত হওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে বিগতদিনে।
বেশ কয়েকজন পথচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব ট্রাক্টর মাটি, ইট, বালি পরিবহনে ব্যবহারের কারণে রাস্তা-ঘাট ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি ধুলাবালির কারণে পরিবেশ ও জনজীবনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া আওয়াজ ও গতিতে মানুষ অতিষ্ঠ। সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেক পথচারী জানান, রোড পারমিশনবিহীন এসব অবৈধ ট্রাক্টর লাইসেন্স বিহীন চালক দ্বারা চালিয়ে রাস্তা-ঘাট ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করলেও এসব বন্ধে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা ছাড়া কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা স্থানীয় প্রশাসন।
এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এ অভিযান চলমান থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ আমিনুল ইসলাম রুদ্র, সহ-সম্পাদক: সুব্রত দেবনাথ, নির্বাহী সম্পাদক : জায়েদ হোসাইন লাকী, বার্তা সম্পাদক : শহীদুর রহমান জুয়েল। ঢাকা-১২৩০ কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।