খাদিজার মুক্তির দাবিতে জবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (২৮ই আগস্ট) বেলা ১২টা দিকে ব্যানার ও পোস্টার হাতে অবস্থান নিয়ে দ্রুত খাদিজার মুক্তির দাবিতে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, “সুস্পষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ না করে গত এক বছরে তিনবার খাদিজার শুনানি পেছানো হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী জানতে চেয়েছে তার দেশের অবস্থা কি? সে প্রশ্ন করেছে আমরা ভালো আছি না খারাপ আছি? এটাই যদি তার অপরাধ হয় তবে আমরা সবাই সেই দোষে অপরাধী। তিনি আরো বলেন যতদিন না তাকে মুক্তি দেয়া হবে ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা দাবি তোলেন তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।তারা সেখানে প্রশ্ন রাখেন তাকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তিনি ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক।তিনি যদি অপরাধ করেই থাকে তবে তার বয়স বিবেচনা করে কেন সংশোধনাগারে পাঠানো হলো না?কেন তাকে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামিদের সেলে রাখা হল?
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন খাদিজার বড় বোন মনিরা। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বোনকে যখন ধরে নিয়ে গেছে তখন সে বলেছে আমাকে কেন আটকে রাখবে। যখন তাকে জেলে কাপড় দিয়ে আসতে যাই, তখন সে বলে আমার কোনো অপরাধ নাই। আমি কেন জেলে থাকবো? প্রথম দিকে কেউ আমাদের সহযোগিতা করে নাই। আত্মীয়-স্বজন সবাই দূরে সরে গেছে এই ভয়ে যে আমাদের সঙ্গে থাকলে তারাও নাকি ফেঁসে যাবে। নভেম্বরে তার পরীক্ষা, কারাগারে বসে সে কি প্রস্তুতি নেবে? তাকে এর আগেই দ্রুত জামিন দেওয়া হোক।
তিনি তার অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কথাও তুলে ধরেন।তিনি জানান তারা প্রোক্টর অফিসে সাহায্য চাইতে গেলে তাদের সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়।বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন সহযোগিতা করা হয় নি।
খাদিজাতুল কুবরার মা ফোনে যুক্ত হয়ে বলেন, এক বছর হয়ে গেল আমার মেয়ে কারাগারে বন্দী। এই বন্দী দশার কারণে আমার মেয়ের পড়াশোনা নষ্ট হয়েছে। সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যেন আমার মেয়েকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক।
খাদিজার ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২০ সালের অক্টোবরে।অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউ মার্কেট থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। বার বার আবেদনের পরেও মুক্তি মিলেনি খাদিজার। এদিকে গত জুলাইয়ে আপিল বিভাগের এক আদেশে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত (৪ মাস) তার জামিনসংক্রান্ত আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়।