এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি ডু অর ডাই সমীকরণের হয়ে যায়। হারলেই বিদায় টাইগারদের সামনে এমন যখন পরিস্থিতি ঠিক তখন সামনে থেকে দলকে টেনেছেন নাজমুল শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের লাহোরে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের দুই ভবিষৎ তারকার জোড়া শতকে ৩৩৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। ফলে ৮৯ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন টিকে রয়েছে সাকিব আল হাসানদের।
৩৩৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ৭ বলে ১ রান করা রহমতুল্লাহ গুরবাজকে আউট করেন তিনি।
এরপর শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে এগিয়ে নিতে আরেক ওপেনার জাদরানের সঙ্গী হন রহমত শাহ। এ দুজন মিলে শুরুর চাপ সামলে সচল রাখেন রানের চাকা। দেখেশুনে খেলে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৭৮ রান। এমন সময়ে টাইগারদের জন্য বেশ প্রয়োজনীয় হয়েছিল একটি ব্রেক থ্রু। আর ইনিংসে নিজের করা পঞ্চম ওভারেই তা এনে দেন তাসকিন। টাইগার স্পিডস্টারের বলে বোল্ড হয়ে ৫৭ বলে ৫ চারে ৩৩ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
এদিকে রহমত ফেরার পর মাঠে নামেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। জাদরানের সঙ্গে ভালো একটি জুটি গড়ে ওঠে তারও। এ দুজন মিলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৫২ রান। তবে দলীয় ১৩১ রানে হাসানের বলে জাদরানের ব্যাটের কোনায় বল লেগে বল চলে যায় উইকেটের পিছনে। আর দুর্দান্ত এক ক্যাচে লাফিয়ে পড়ে তা লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। ফলে ১০ চার এবং ১ ছয়ে ৭৪ বলে ৭৫ রান করেই ফিরতে হয় তাকে।
চতুর্থ উইকেটে হাশমতউল্লাহ শহীদি ও নাজিবুল্লাহ জাদরান ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। তবে দলীয় ১৯৩ রানে নাজিবুল্লাহ আউট হলে ভাঙে ৬২ রানের জুটি। ১৭ রান করেন তিনি। এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকেননি হাশমতউল্লাহও দলীয় ১৯৬ রানে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন এই ব্যাটার। ফলে দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। এরপর আর কোন আফগান ব্যাটার বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেন নি। আশা যাওয়ার মিছিলে শেষ পর্যন্ত রানে গুটিয়ে যায় রশিদ খানরা। টাইগারদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ নেন চারটি।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান। এরপর বেশ কিছু চমকের সাক্ষী হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আজ ওপেনিংয়ে নাঈম শেখের সঙ্গী হয়েছিলেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ৬০ রানের সফল ওপেনিং জুটির পর দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। এরপর টাইগারদের দ্রুত দুই হারানোর পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়েছেন ১৯৪ রানের রেকর্ড জুটি, শতক হাঁকিয়েছেন শান্ত নিজেও। দুই টপ অর্ডারের জোড়া শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। টাইগারদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।