যশোরের মণিরামপুরে পরকীয়ার অভিযোগে রহিমা বেগম (৩৮) নামে এক বিধবাকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। এরপর লজ্জায় অপমানে ওই বিধবা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে রোববার ১০/০৯/২৩ বিকেলে গৃহবধূর ভাই আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ বরুন দত্ত (৩৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল ০৯/০৯/২৩ শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার পোড়াডাঙা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রহিমা ওই গ্রামের মৃত ইছানুর রহমানের স্ত্রী। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। ৫-৬ বছর আগে বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা গেছেন ইছানুর। এরপর মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ভিটায় থাকতেন রহিমা।
তবে বিধবা রহিমার মামা নাজমুল সরদার বলেন, রহিমাকে বিভিন্ন সময় স্থানীয় ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার ও মান্নান নামক দুজন ব্যক্তি নিয়মিত কু-প্রস্তাব দিতো। সে রাজি না হওয়ায় পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে সুপরিকল্পিতভাবে বরুণ কে মারপিট করে এবং রহিমাকে তাকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে। পরে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলে, ৭/৮ বছর ধরে আক্তারের সাথে রহিমা র গভীর সম্পর্ক ছিল কিন্তু বরুণের সাথে এই নতুন সম্পর্ক কে মেনে নিতে পারে নাই আক্তার। তাই এই ঘটানাতে বরুণকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা!
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, আটক বরুনের সাথে পরকীয়া ছিল রহিমার। শনিবার মধ্যরাতে রহিমার ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় ৩-৪ জন বরুনকে বাড়ির সামনে রাস্তায় ধরে ফেলেন। এসময় সেখানে লোকজন জড় হন। তখন রহিমা ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে উপস্থিত লোকজন তাঁকে মারপিট করেন। পরে ঘরে ঢুকে আড়ার সাথে ওড়না জড়িয়ে বিধবা রহিমা আত্মহত্যা করেছেন।
রহিমার শ্বশুর মশিয়ার রহমান বলেন, আমি মাছের ঘেরে থাকি। শনিবার রাত ১১ টার দিকে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ১/২ টার দিকে ২-৩ জন এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে রাস্তায় নিয়ে যায়। সেখানে দেখি বরুনকে আটকে রেখেছে। আমার সামনে ওরা বউমাকে মারপিট করেছে। পরে ঘরে এসে বউমা গলায় ফাঁস দেছে।
মণিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসীন আলি বলেন- স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আটক বরুনের সাথে রহিমার পরকীয়া আছে। এ অভিযোগ এনে শনিবার রাতে স্থানীয়রা গৃহবধূ রহিমাকে বকাঝকা করেছে কিন্তু মারপিট করছে কিনা জানা নাই। পরে লজ্জায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।
মণিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী মাহাবুবুর রহমান বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে বিধবা মহিলা র ভাই মামলা করেছেন। স্থানীয়রা বরুন নামে একজনকে ধরে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। রহিমা র লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আইন অনুযায়ী।