জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে স্বপদে পুনর্বহাল করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা তাঁতী লীগ।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রুকু এবং সদস্যসচিব আরমান হোসেনের যৌথ স্বাক্ষরে এই কমিটি অনুমোদিত হয়।
সহিদুর রহমান লিপন উপজেলার মালিরচর তকিরপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ছিলেন। সেই কমিটি অপূর্ণাঙ্গ ছিল। সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তখন তাঁকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার এজাহারে ১১ নম্বর আসামি করা হয় উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, নাদিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় তাঁতী লীগ নেতা লিপন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে লিপন সর্বাত্মক চেষ্টা চালান।
এ বিষয়ে সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া এবং এজাহারভুক্ত আসামিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন তাঁতী লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি পদে নিযুক্ত করায় আমরা বিস্মিত। মূলত হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে মুক্ত করতেই সন্ত্রাসী লিপনকে তাঁতী লীগের লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি করা হয়েছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে তাঁতী লীগ থেকে অভিযুক্ত লিপনকে বহিষ্কার করা হোক।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডে সহিদুর রহমান লিপনের সংশ্লিষ্টতা জোড়ালোভাবে উল্লেখিত হওয়ায় দলীয় ভাবমূর্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্নের অভিযোগে এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙের দায়ে মামলা দায়ের আগের দিন ১৭ জুন বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে থেকে লিপনকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে জেলা তাঁতী লীগ।
জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন রুকু বলেন, ‘সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় সহিদুর রহমান লিপনকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছিলাম। নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকতেই পারে। এখন তিনি জামিনে আছেন। সে কারণেই তাঁকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, উপজেলার সাধুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১৮ জুন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুলকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।