ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন এক ছাত্রকে কয়েকদফায় র্যাগিংয়ের দায়ে একই বিভাগের সিনিয়র দুই ছাত্রকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে নির্যাতনে সংশ্লিষ্ট আরো তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে ভাঙচুরের ঘটনায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মীকে। তাকে এর আগেও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়ার ঘটনায় একবছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়৷
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে দৈনিক নববার্তাকে নিশ্চিত করেন কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। এদিকে একইদিনে পরীক্ষায় অসদুপায় (নকল) অবলম্বন করায় বিভিন্ন মেয়াদে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটি।
জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত দেন একই বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী। সেখানে তাকে একাধিকবার নির্যাতন করার কথা উল্লেখ করেন। পরদিন ঘটনার তদন্তে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। তদন্তে র্যাগিংয়ের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ও কমিটির সদস্যদের সুপারিশে হিশাম নাজির শুভ ও মিজানুর রহমান ইমনকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিবকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তারা সকলেই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এদিকে গত ১০ জুলাই আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য ও তার সহযোগী সালমান আজিজ, আতিক আরমানের বিরুদ্ধে মেডিকেলে ভাঙচুর এবং কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ উঠে। পরে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ও ভূক্তভোগীরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ফলে ১৫ জুলাই তাদের তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদনে রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এদিতে কাব্যের সাথে থাকা সালমান আজিজ ও আতিক আরমান ঘটনায় সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ দৈনিক নববার্তাকে বলেন- তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও মিটিংয়ে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অফিসিয়াল কাজ শেষে সকলকে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হবে। কোন অপরাধেরই ছাড় নেই। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা বদ্ধ পরিকর।