প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? ভবিষ্যতে বাংলাদেশ চাঁদেও যাবে। সেইভাবে আমরা দেশে দক্ষ ও স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলবো। শনিবার (৭ অক্টোবর) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন শুরু করে। আকাশ পথে এক জেলা থেকে অন্য জেলা সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। আগামীতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ।
এর আগে সকালে দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল এম মফিদুর রহমান।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিংয়ের মধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষের জন্য একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সম্বলিত টার্মিনালের দ্বার উন্মোচিত হলো। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এ টার্মিনালের। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের যাত্রীরা এ টার্মিনালের সবধরনের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অবশিষ্ট অর্থায়ন করেছে। তৃতীয় টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে, তৃতীয় টার্মিনালনালে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গ মিটারের একটি ফ্লোর স্পেস, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন এবং ৩টি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার পর ঢাকা বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
তৃতীয় টার্মিনালনালে বার্ষিক যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা হবে ২৪ মিলিয়ন (পুরানো টার্মিনালসহ), যা এখন মাত্র আট মিলিয়ন এবং বিমানবন্দরটি প্রতি বছর পাঁচ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডেল করতে পারে। ৩৭টি নতুন এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এরিয়া এবং এপ্রোন এলাকায় সংযোগকারী দুটি ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের মধ্যে তৃতীয় টার্মিনালের ডাবল এন্ট্রি ব্রিজসহ ১২টি বোর্ডিং গেট চালু হবে এবং পরবর্তী ১৪টি বোর্ডিং সেতু পরবর্তীতে স্থাপন করা হবে।