মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ট্রাকে ডাকাতির সময় চালক ও হেলপারকে হত্যার ঘটনায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এই আদেশ দেন। এ সময় একজন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে- ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বড়াকৈর গ্রামের বদর উদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের মো. ইসলাম ওরফে কালু, একই গ্রামের ইয়াকুব আলী শেখ ও গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর উপজেলার হারবাইদ গ্রামের বিল্লাল শিকদার।
দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোড এর ২০১ ধারার অপরাধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ের আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে- মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি গ্রামের বাবু মিয়া, ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার কলমা গ্রামের শাহ আলম, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের বাবুল শেখ, সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাহপাড়া উপজেলার মধুপুর গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন ও মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের আখের আলী।
আদালত ও মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে ৬ আগস্ট সাতক্ষিরা জেলার ভোমরা স্থল বন্দর থেকে পাথার নিয়ে ট্রাক চালক জয়নাল (৪০) ও হেলপার রুবেল (২৮) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর যাচ্ছিলেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে আসামিরা মানিকগঞ্জ থেকে ট্রাকটি তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন। এর পর ট্রাক চালক জয়নাল ও হেলপার রুবেলকে হত্যা করে তাদের লাশ রাতেই মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ব্রিজের কাছে ফেলে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দিন ৭ আগস্ট ঘিওর থানা পুলিশ নিহত দুইজনের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের স্বজনরা মরদেহ সনাক্ত করেন ও ট্রাক চালক জয়নালের ভাই হারুনার রশিদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে ঘিওর থানায় মামলা করেন।
আলোচিত এই হত্যা মামলাটি প্রথমে ঘিওর থানার এসআই এনামুল হক ও পরে ডিবির এসআই আব্দুস সালাম তদন্ত করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ৯ জনকে আসামি করে গত ২০১১ সালে ৩০ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিরা বিভিন্ন সময় আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাকত হন। এই মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি মথুর নাথ সরকার ও আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক।