ইসরায়েলে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। পাশাপাশি হামাস নির্মূল করতে গিয়ে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ‘ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ’কে অসহনীয় বলেছেন তিনি। ওবামা বলেছেন, ‘হামাস যা করেছে, তা ছিল ভয়ংকর এবং এর কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং এটিও সত্য যে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যা ঘটছে তা অসহনীয়।’
স্থানীয় সময় শনিবার (৪ নভেম্বর) প্রচারিত ‘পড সেভ আমেরিকা’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। পডকাস্ট আয়োজন করেন ওবামার ক্ষমতার সময়ে হোয়াইট হাউসের কিছু সাবেক সহকর্মী। এতে জানানো হয়, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অপারেশনে যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে বলেই ইঙ্গিত মেলে। ওবামা বলেন, এই সংঘাতে এখন এমন সব বেসামরিক লোক মারা যাচ্ছে, যাদের সঙ্গে হামাস বা তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের বিষয়ে তিনি বলেন, সমস্যাটির সমাধান করতে চাইলে গোটা বিষয়ের সত্যটি জানতে হবে। তারপর যে কেউ স্বীকার করবে যে এই ইস্যুতে কারও হাত পরিষ্কার নয়, আমরা সবাই কিছুটা হলেও জড়িত। এর আগেও গাজায় নৃশংসতা নিয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিলেন ওবামা।
গাজায় খাদ্য ও পানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের প্রতি ফিলিস্তিনিদের মনোভাবকে আরও কঠোর করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাবেক প্রেসিডেন্ট। এসব অমানবিক কর্মকাণ্ড ইসরায়েলের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন দুর্বল করতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। অক্টোবরের শেষ দিকে বারাক ওবামা বলেছিলেন, যুদ্ধের মানবিক মূল্যকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের এমন সামরিক কৌশল ‘শেষ পর্যন্ত ব্যাকফায়ার হতে পারে’।
তিনি বলেছিলেন, গাজায় বন্দি বেসামরিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য, পানি এবং বিদ্যুৎ বন্ধ করার ইসরায়েলি সরকারের সিদ্ধান্ত শুধু মানবিক সংকটকে আরও খারাপের দিকে নিয়েই যায় না, এটি ইসরায়েলিদের ওপর ফিলিস্তিনিদের মনোভাবকে আরও কঠোর করতে পারে। ইসরায়েলের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থন হ্রাস করতে পারে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ওবামা প্রায়ই গাজায় হামাসের সঙ্গে সংঘাতের শুরুতে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু বিমান হামলায় ফিলিস্তিনিদের হতাহত হওয়ার পর তিনি ইসরায়েলকে সংযমের আহ্বান জানান। ওবামা প্রশাসন ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আলোচনায় একটি শান্তি চুক্তির চেষ্টা করেছিল – কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়। পাল্টা জবাবে তখন থেকেই গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাও। কয়েকবার স্থল অভিযানও চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।