বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত দু’মাস ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানির পাম্প বিকল হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং তাদের সাথে আসা স্বজন ও আবাসিক ভবনে বসবাসরত ডাক্তার, নার্স এবং কর্মকর্তারা।
পানির পাম্প বিকল হওয়ার পর থেকে বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ বড়াল, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন একাধিকবার জানালেও তারা এখন পর্যন্ত পাম্প ঠিক করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে পাশের পুকুরে পাম্প বসিয়ে পানি সরবরাহ করছে। হাসপাতালে পুকুরের পানি সরবরাহের কারণে অনেক রোগী না জেনে সেই পানি পান করছে। এতে করে অনেক রোগীই ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহের জন্য কয়েক বছর আগে একটি নতুন বৈদ্যুতিক মর্টার বাসানো হয়। মর্টারটি গত দু’মাস আগে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নোংরা হয়ে আছে হাসপাতালের পরিবেশ। সর্বত্র ছড়িয়ে পরছে দুর্গন্ধ।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রোগী এবং তাদের স্বজনরা বালতি এবং পানির বোতল ভরে বাহিরের গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আসছেন। হাসপাতালের আবাসিক ভবনে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বসবাসরত সকলে পরেছেন মহাবিপদে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক ভবন। ওই সব ভবনে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীরা পানির অভাবে ঠিকমত গোসলসহ সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারছেন না।
হাসপাতালে ভর্তি লিজা বেগম বলেন, পাশের গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে আমাদের। আর যারা জানে না তারা পুকুরের ময়লা পানি ব্যবহার করছে।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে বসবাসরত নার্স মৃদুলা কর বলেন, হাসপাতালের পানি তোলার বৈদ্যুতিক পাম্প মেশিনটি নষ্ট থাকায় এখন আমরা পানি পাই না। বিকল্প ব্যবস্থায় বাহির থেকে পানি সংগ্রহ করে তা দিয়ে সাংসারিক, রান্নাবান্না ও ধোয়া মোছাসহ বাসা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছি। আমাদের পানি না হলে এক মিনিটও চলে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, পানির পাম্পে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। বিষয়টি এখন পর্যন্ত সমাধানের কোন চেষ্টা করেনি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এবিষয়ে বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফারুক ইকবাল বলেন, নতুন পাম্প স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কবে নাগাদ নতুন পাম্প স্থাপন করা হবে তা বলা যাচ্ছেনা।