মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত কিয়াম উদ্দিন বেপারীর ছেলে আব্দুল বেপারী বর্তমানে পেশায় একজন কৃষক। একসময় ইঞ্জিনচালিত বালুর ট্রলার চালাতেন। এরপর ঢাকায় ইট-বালুর ব্যবসা শুরু করে মোটা অঙ্কের লাভ করেন। এর পর থেকেই জনপ্রতিনিধি হতে ভোটে দাঁড়ান তিনি। তাঁর এই ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল নিয়ে এক যুগ ধরেই এগিয়ে চলছেন তিনি।
শনিবার কথা হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল বেপারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোট না পেলে দুঃখ তো লাগেই। আমি সাধারণ কৃষক। আপামর জনসাধারণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, গরিব-দুঃখীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতেই আমার নির্বাচনে আসা। বাবার স্বপ্নপূরণে জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করে আসছি ২০১১ সাল থেকে। কিন্তু জয়ের দেখা পাইনি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি বেশ আশাবাদী।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বাইরেও একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। তাই ভোট ভাগাভাগি হবে। আমার নিজস্ব ভোটব্যাংক রয়েছে। সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবেসে ভোট দেবেন।’
আব্দুল বেপারীর স্ত্রী শহরজান বেগম বলেন, ‘স্বামীর নির্বাচনী কাজে কখনো বাধা দেইনি। স্বামীর ভালো লাগাই নিজের ভালো লাগা মেনে নিয়ে পাশে আছি। তিনি একজন সফল মানুষ। তিন ছেলে আর দুই মেয়েকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।’
স্থানীয় বেড়াডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী মো. শোভন বলেন, ‘তাঁর মতো সাধারণ ও সৎ মানুষের জয়ী করতে না পারাটা আমাদের দুর্ভাগ্যের।’
স্থানীয় তরব আলী জানান, আব্দুল বেপারী জনগণের জন্য কাজ করতে চান। তিনি তাঁর সাধ্যমতো চেষ্টা করেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। তিনি তাঁর স্বপ্ন ও ইচ্ছাপূরণে বারবার বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন।
সিংজুরী বাজারের ব্যবসায়ী সুজায়েত হোসেন বলেন, ‘একসময় ইঞ্জিনচালিত বালুর ট্রলার চালাতেন আব্দুল বেপারী। এরপর ঢাকায় ইট-বালুর ব্যবসা শুরু করে অনেক টাকা সঞ্চয় করেন। মানুষ হিসেবে তিনি সহজ-সরল। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খুবই কম ভোট পান। তবু কেন যে তিনি নির্বাচনে দাঁড়ান, তা বুঝি না।’
ঘিওর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম জানান, আব্দুল বেপারী নামের একজন প্রার্থী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশের যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়গুলো দেখবেন। আইনবিধি অনুযায়ী ত্রুটিযুক্ত হলে সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে।
আব্দুল বেপারী সর্বশেষ ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। এর আগে ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সব কটিতেই জামানত খোয়া যায়।