আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন।
শেখ ফজলুল হক মনি ১৯৩৯ সালের ৪ ডিসেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ নূরুল হক বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি। মা শেখ আছিয়া বেগম বঙ্গবন্ধুর বড় বোন।
তিনি ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউট থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং ১৯৫৮ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। এরপর ১৯৬০ সালে তিনি বরিশালের বিএম কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। শেখ মনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ১৯৬৩ সালে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৬০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত শেখ মনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি ছয় মাস কারাভোগ করেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তৎকালীন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন শেখ মনি।
বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা বাস্তবায়নে জোরালো ভূমিকা পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন তখন ছয় দফা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের দায়ে শেখ মনির বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন। দীর্ঘ কারাবাস শেষে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্তি পান। ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করলে দেশ মাতৃকার টানে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ মনি।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে দেশের যুব সমাজকে সাথে নিয়ে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন শেখ ফজলুল হক মনি এবং তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের ঘাতকরা হত্যা করে। ওই রাতেই ঘাতকের বুলেটে নিহত হন শেখ মনি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি।