পেঁয়াজের বাজারে কৃত্রিম সংকটে দিশেহারা ক্রেতা। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের ঘোষণার পর থেকেই বাজারে শুরু হয় নৈরাজ্য। এ অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়াতেও পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অপরদিকে বাজারে আসতে শুরু করেছে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন নতুন পেঁয়াজের দিকেই। ফলে বিপাকে পড়েছেন দেশি পুরাতন ও ভারতীয় পেঁয়াজ মজুতকারীরা।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি, দেশী পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজিতে। এক্ষেত্রে অন্যান্যগুলোর তুলনায় দেশি নতুন পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে বেশি।
অন্যদিকে, ভারতীয় পেঁয়াজ নিয়ে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও সেগুলোতে ক্রেতা নেই বললেই চলে। ফলে অনেকের পেঁয়াজ পচতে শুরু করেছে, যেগুলো আবার আলাদা আলাদা করে আরও কম দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পরপরই বেশি দামে বিক্রির আশায় ১০ মণ ভারতীয় পেঁয়াজ কিনে রেখেছিলেন মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আসলাম। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়া এবং নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় মাথায় বাজ পড়েছে তাদের। এখন বাধ্য হয়েই কমদামে পেঁয়াজ ছাড়তে হচ্ছে তাকে। এমনকি গুদামে বস্তাবন্দী থাকায় পেঁয়াজে পচনও ধরেছে।
তিনি জানান, ‘পেঁয়াজ কিনেছিলাম ১৬০ টাকা করে, কিছুদিন ২০০ টাকা কেজি বিক্রিও করেছি। কিন্তু গত দু-একদিন যাবত হঠাৎই বিক্রি কমে গেছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় মানুষ কম দামে সেগুলোই কিনছে। কী আর করা, লোকসান হলেও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর এক আদেশে রপ্তানি বন্ধের খবর জানায় ভারত। তবে এই সিদ্ধান্ত আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক লাফে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হয়ে যায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। এ নিয়ে ভোক্তাদের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানীসহ দেশের কিছু কিছু জায়গায় রীতিমতো মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ কম দামে বিক্রি করে দেন তারা।