আল মামুন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ পৌরসভার রাস্তা নির্মাণের কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিটুমিনসহ মানসম্পন্ন উপকরন ব্যবহার না করায় রাস্তার টেকসই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। রাস্তার দুপাশে পর্যাপ্ত পরিমান মাটি এবং পাথরের গ্রেডিংয়ে মিল না থাকায় নির্মাণের সপ্তাহ পার হতে-না হতেই পাথর উঠে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই রাস্তায় ফাটল দেখা দেওয়ায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
রাস্তাটিতে রয়েছে, শহর সমাজসেবা কার্যালয় ও দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র, সিটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, মহিলা মাদরাসা এবং পেইন-প্যারালাইসিস স্পেশালাইজড এন্ড জেনারেল হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, পৌরসভার শহীদ স্বরনী রোড থেকে পেইন প্যারালাইসিস হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হানিফ এন্ড রিকা (জেবি)। কাগজে কলমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটর রনির নাম থাকলেও কাজটি বাস্তবায়ন করেছে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি নির্মাণ হয়েছে এখনও এক সপ্তাহ হয়নি কিন্তু এর মধ্যেই রাস্তার পাশ দিয়ে ফাটল দেখা গেছে। এছাড়াও রাস্তার একপাশে উচু অন্য পাশে নিচু রয়েছে। সামান্য আছড়েই রাস্তার পাথর উঠে যাচ্ছে।
পেইন প্যারালাইসিস হাসপাতাল এন্ড স্পেশালাইজডের পরিচালক জামিল হোসেন সোহেল বলেন, কাপেটিংয়ের কাজে নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। যা ঠিকাদার নীতিমালা পরিপিন্থি।
এই রাস্তাটি শিক্ষার্থী, রোগী এবং জনসাধারনের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। এ রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম দেশের উন্নয়নে কারচুপির সামিল। পৌরসভায় এমন কাজ বাস্তবায়িত হওয়ায় সচেতন মহলে বেশ আলোচনার ঝড় বইছে। যারাই এ রাস্তায় চলাচল করছে তারাই সমালোচনা করছে।
ওই রোডে অবস্থিত বেসরকারি হাসপাতালের শেয়ারহোল্ডার মারুফ বলেন, আমি নিজেও একজন ঠিকাদার। ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা আমি নিজে করেছি। রাস্তা নির্মাণের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। এখানে এতই নিম্নমানের কাজ হয়েছে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি ধসে যাবে। এ রাস্তা নতুন করা হলেও আগেরটাই ভালো ছিল। রাস্তাটির বর্তমান যে অবস্থা তাতে জন-দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
পৌরসভার সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বাতেন মিয়া বলেন কাজটি ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন করেছেন। আপনারা তারসাথে বিস্তারিত কথা বলেন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটর রনি জানান, আমার লাইসেন্স নিয়ে অন্য কেউ কাজটি করছে। এটা দেখার জন্য কর্তৃপক্ষ রয়েছে অনিয়ম হলে তারা দেখবে। ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন বলেন, আমি ঠিকাদার নই। কাজটি কেমন হচ্ছে তা জানতেই আমি দেখাশোনা করেছি।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আ.ন.ম. গিয়াস উদ্দিন বলেন, রাস্তায় যেদিন ঢালাই হয়েছে সেদিন আমি ঢাকা ছিলাম। সরেজমিনে রাস্তা পরিদর্শন করবো। শতভাগ সচ্ছভাবে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অনিয়ম হলে বিল ছাড় দেয়া হবেনা। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।