লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া লক্ষ্মীপুরের ৪টি সংসদীয় আসনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বিঘ্ন ভোট গ্রহন শেষে ৪টি আসনের ৪৭৭ কেন্দ্রে চলছে গণনা। রোববার (৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই গণনা শুরু হয়।
এর আগে দুপুরে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে ৪ কেন্দ্র থেকে পৃথক ৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া রামগঞ্জের একটি কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের হাবিবুর রহমান পবনের চীফ এজেন্ট শামছুল হক মিজানকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীরা মারধর করে তার ব্যবহৃত গাড়ী ভাংচুর করেছে বলে জানা যায়।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিন লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের আদর্শ সামাদ সরকারী উচ্চবিদ্যালয়,লক্ষ্মীপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়,পৌরসভার পাবলিক স্কুল কেন্দ্র,পৌর লাহারকান্দি উচ্চবিদ্যালয়,গৌরিনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,লাহারকান্দি ফরিদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সহ ২০ টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনের চিত্র। এসব কেন্দ্র সকাল থেকে ভোটাররা থেমে থেমে এসে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে দেখা যায়। এগুলোর কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ-বিজিবি-আনসার সহ নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহীনি ভোটের পরিবেশ রক্ষায় ছিল সচেষ্ট। এমন চিত্র জেলার ৪টি আসনের ৪৭৭ টি কেন্দ্রের প্রায় সবকয়টিতে।
তবে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় মুরাদ (২২ বছর), গৌরিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রিয়াজ হোসেন ইমন, হাজিরপাড়া কেন্দ্রে ২ জন এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনের কেরোয়া সিরাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র ও কেরোয়া ছবিলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাবলা ও হারুনুর রশিদ নামে দুইজনকে আটক করা হয়।
লক্ষ্মীপুর-১ আসনে রামগঞ্জের পূর্ব সোন্দড়া সঃ প্রা: বিঃ ভোট কেন্দ্র থেকে ঈগল প্রার্থীর চীফ এজেন্ট আনোয়ারকে মারধর করে বের করে দেয় একদল লোক। বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান প্রিজাইডিং অফিসার মেহেদি হাসান।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনেও কয়েকটি কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের ভোট চলাকালিন কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার খবর জানা গেছে।
বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনা ছাড়া লক্ষ্মীপুরের প্রায় সবকয়টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
তবে এসব আসনের বেশীরভাগ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অভিযোগ করে জানায়, নৌকার পক্ষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যাপকহারে জাল ভোট প্রদান করা হয়েছে। যদিও এসব বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এবার লক্ষ্মীপুরের ৪টি সংসদীয় আসনে ভোটার সংখ্যা ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৬। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ৭ লাখ ২২ হাজার ৩৯৯, পুরুষ ভোটার ৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৯৩। আর হিজড়া ভোটার ৪ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ২ জন প্রার্থী ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে জেলায় সেনাবাহিনীর ৩৪৫ জন সদস্য, ১০ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৮টি পেট্টোল টিম, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার সদস্যসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করেছেন।