রাজশাহী ব্যুরো সংবাদ: রাজশাহী জেলা ও উপজেলার সীমান্ত এলাকার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে চোরাই পথে আসছে ভারতীয় গরু ও গরুর মাংস।দেশিয় গরু ও গরুর মাংসের দাম চড়া হওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চোরাইপথে আমদানি করছে ভারতের গরু ও গরুর মাংস। সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতে এমনই একটি চোরাই সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ সকল সিন্ডিকেটের সকল সদস্যই রাজশাহী মতিহার থানা এলাকার।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী মতিহার থানাধীন গাবতলি ফেরী ঘাট বর্তমান ডগার ঘাট নামে পরিচিত ঘাটটির লিজ নেয় হাদি নামের এক ব্যাক্তি। সেই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী ডগার ঘাট দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে প্রতিনিয়ত করিডরে কাগজ বিহীন ভারতীয় চোরাই গরু তুলে চলেছেন রাজশাহী মতিহার এলাকার ধরমপুর পূর্বপাড়া বৌ বাজার এলাকার মতি নামের এক ব্যাক্তি। তার পিতার নাম সাত্তার। সে লোক দেখানোর জন্য বলে থাকে সাহেববাজারে সে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করে।কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই ভারতীয় চোরাই গরু সিন্ডিকেটের নাটের গুরু এই মতি। সাংবাদিকদের একটি অনুসন্ধানী দলের কাছে মতি স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্য দিয়ে গরু পাচারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত)
▶ ভারতীয় চোরাই গরু সিন্ডিকেটের সাথে যারা রয়েছে বলে জানিয়েছে মতি তাদের নাম নিম্নে দেয়া হইল –
১. জামাল বেপারী, পিতা – মৃত: সাদেক শেখ, মিজানের মোড়, মতিহার, রাজশাহী
২. শাহীন আলী ও মোমিন আলী পিতা: ফজলু ঠিকানা : মতিহার, রাজশাহী
৩. সোহেল পিতা: কাশেম। ঠিকানা : মিজানের মোড়,মতিহার, রাজশাহী
৪. রশিদ, পিতা : মাইনুল, ঠিকানা: শ্যামপুর, কাটাখালী।
৫. সুজন পিতা : বাক্কার ঠিকানা: ডাসমারী বটতালা, মতিহার, রাজশাহী
৬.জারমান, পিতা: কুরহান ঠিকানা: জালাল স্বর্নকারের মোড়, ডাঁসমারী, মতিহার, রাজশাহী
৭.সুরমান পিতা:কুরহান সাং: গোরস্থান এর মোড় খোঁজাপুর ডাঁসমারী,মতিহার, রাজশাহী
৮. জিনা, পিতা:বাক্কার সাং:বটতালা ডাঁসমারী,মতিহার, রাজশাহী
৯. মাদক সম্রাট রবিউল পিতা; মৃত ইমরান ঠিকানা ১০ নাম্বার চর।
১০.বেলালের ভাই মাদক ব্যবসায়ী আলম ১০ নাম্বার চর।
১১. মানিক পিতা: শুকুর বর্তমান ঠিকানা খানপুর
১২. রেজা, পিতা: অজ্ঞাত, খানপুর চর, কাটাখালী।
এদিকে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মতি ও জার্মান সিন্ডিকেট গত ৮ই জানুয়ারী ১৫টি গরু চোরাইভাবে পাচার করছিল এসময় সাহাপুর বিজিবি ক্যাম্প ১৫টি গরুর মধ্যে ৩টি গরু হাতে নাতে ধরতে সক্ষম হয় এবং পরবর্তীতে রাজশাহী বিজিবি সদর দপ্তরে পাঠানো হয়।
এছাড়াও সাংবাদিকদের কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় চোরাই গরু সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা মতি স্বীকার করেছেন সে কবে কয়টি গরু ভারত থেকে এনে পাচার করেছে। এছাড়াও এই গরু উত্তোলনের জন্য তাকে কাকে কয় টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছেন তাও তিনি স্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে বাঘার আলাইপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ৩৫ কেজি ভারতীয় গরুর মাংস জব্দ করেছে বিজিবি। বিজিবি জানায়, মাংসগুলো আলাদা আলাদা পলিথিনের প্যাকেটে ছিল। আর প্যাকেটগুলো প্লাষ্টিকের বস্তায় করে আনা হচ্ছিল। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানায় এই সকল গরুর মাংস রাজশাহী মতিহার এলাকার মতি সিন্ডিকেটের ছিল।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিহার থানার ওসি রুহুল আমিন জানান – বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা তবে আমি তদন্ত করে এই সিন্ডিকেটকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ।
ভারতীয় চোরাই গরু সিন্ডিকেটের মতি ও জার্মান গ্যাং এর বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও উপকমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। তারা যতো বড় গ্যাং হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। যারা দেশের কর ফাঁকি দেয়, চুরি করে তারা দেশ ও দশের শত্রু। অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
_______________________________
ধন্যবাদান্তে