আল মামুন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার প্রত্যন্ত একটি ইউনিয়নের নাম ৬নং বানিয়াজুরী ইউনিয়ন। কাল প্ররিক্রমায় আজও ইউনিয়ন পরিষদটি শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলা-ধূলা, উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও সরকারের সেবামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তায় সমুজ্জল রেখেছে। তার ধারাবাহিকতায় ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান এসআর আনসারী বিল্টু।
প্রায় ২৫ হাজার ভোটার নিয়ে গঠিত ইউনিয়নটিতে বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়নটিতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, জলাবদ্বা নিরসন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, ইটের সলিং সংস্কারসহ ডিজিটাল সেবা কার্যক্রমসহ উন্নয়ন কাজে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তিনি। ইউনিয়নটির প্রতিটি গ্রামে রয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা রাস্তার কাদা ভেঙ্গে ও ইটের সলিং দিয়ে যাতায়াত করতে হতো ইউনিয়নবাসীকে। এলাকাবাসী কখনো কল্পনা করেনি ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা পাকা হবে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের টানা চার বার ক্ষমতায় থাকার কারণে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন বানিয়াজুরী ইউনিয়নসহ আসে পাশের ইউনিয়নের মানুষ।
ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেবা জন্ম নিবন্ধন, জমির খতিয়ান উঠানো, জন্ম ও মৃত্যু সনদ, বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি ফর্ম পূরণ, আর্থিক ব্যংকিং সেবা, বিভিন্ন প্রত্যায়ন, অনলাইনে ভোটারের আবেদন, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, ই-মেইল সুবিধা, বিভিন্ন ভাতা ভোগীদের নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিষদে বসেই এসব ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন এলাকাবাসী। যে কারণে জনসাধারণকে এখন আর উপজেলা পরিষদসহ জেলা শহরে যেতে হয় না। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে হাতের কাছে এই নাগরিক সেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন ইউনিয়নবাসী। আর এসব সেবামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ইউনিয়নটি একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
সবার সহযোগিতা পেলে স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মানে সরকারের সকল সেবা কার্যক্রম জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া সম্ভব বলে মনে করেন ইউপি চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টু।
তিনি জানান, স্বাধীনতার সময় থেকে তার বাবা, চাচা, ভাই ও নিজের পরিবার পরিজনদের ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সেবা করে আসতে দেখেছেন। অসহায়, দরিদ্র, ও মেধাবীদের সেবা করতে দেখে নিজেই সিদ্ধান্ত নেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউনিয়নবাসীর সমর্থন পেয়ে জয়লাভ করেন।
এরপর থেকে ৬ নং বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে উপহার দেয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সমাজ ও মানব সেবায় গুরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি এলাকায় জনকল্যাণে কাজ করে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন।
ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম, মোঃ শরীফ হোসেন, মিজানুর রহমানসহ অনেকে বলেন, আমাদের ইউনিয়নে যে সকল কাঁচা রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হতো। সে সকল রাস্তাগুলো ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ইটের সলিং হয়েছে। আমাদের আর কাঁদা মাখতে হয় না, বর্ষার সময় আমাদের উঠানে পানি জমে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাবদ্ধা নিরসনে খাল খননের কারণে এখন আর জলাবদ্বতা হয় না। জমিতে ফসল হচ্ছে ভাল। আমাদের ইউনিয়নটি এখন একটি একটি মডেল ইউনিয়ন বলা যেতে পারে।
ইউপি সদস্য মোঃ রাজা মিয়া ও তৌহিদুল ইসলাম তুহিন বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের সময়ে ইউনিয়নটিতে যতটা উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতার পরে এত উন্নয়ন আর কখনো হয়নি। আমরা সকল ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের সাথে থেকে ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টু বলেন, এই ইউনিয়নটি অবহেলিত ছিল। আমি ক্ষমতা গ্রহণের পর মডেল ইউনিয়ন গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে রাস্তা, কালভার্ট, ড্রেন নির্মাণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য খাল খনন, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা ইউনিয়নবাসীকে দিয়ে যাচ্ছি। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্ধ শতাধিক অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই, স্কুল ড্রেস, জুতা থেকে শুরু করে তাদের প্রাইভেট শিক্ষকের টাকা দিয়েও আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসছি। এছাড়াও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় খেলাধূলার উপকরণ বিতরণ করছি।
তিনি আরও জানান, প্রশাসন ও ইউনিয়নবাসীর সহায়তায় মাদক ও সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য কাজ করে যাচ্ছেন। ইউনিয়নবাসীর সহযোগিতায় ৬ নং বানিয়াজুরী ইউনিয়নকে একটি আধুনিক ও মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা চান তিনি।