লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদনকারীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় জাকির হোসেন পলাশ নামে এক দালালকে হাতে নাতে আটক করা হয়েছে। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ তাকে আটক করে। আটক ব্যক্তি থানা হেফাজতে রয়েছেন। আটক পলাশ সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, স্থানীয় মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মমিন উল্যাহর এলাকার একটি ছেলে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য প্রায় ৭ মাস আগে আবেদন করেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। একইসময় যারা দালালের মাধ্যমে আবেদন করেছেন তাদের এনআইডি হয়ে গেছে। দালালদের কাছ থেকে প্রতিটি কাজের জন্য সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এরশাদ ৩ হাজার টাকা করে নেন। টাকা দিলে তিনি দ্রুত কাজ করেন। টাকা না দিলে তিনি কোন কাজ করেন না। বুধবার দুপুরে আবেদনকারীর সঙ্গে টাকা লেনদেন করতে দেখে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে পলাশ নামে ওই দালালকে আটক করে নিয়ে যায়। আর এরশাদের বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়।
ভুক্তভোগী মান্দারী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের শিহাব বলেন, গত অক্টোবর মাসে আমি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে আসি। তখন পলাশ খুব সহজে এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১৬ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু এনআইডি করে দেননি। পরে তিনি আমাকে জানান এখন তিনি এনআইডি করে দিতে পারবেন। এতে মঙ্গলবার তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা দেওয়ার সময় পুলিশ নির্বাচন কার্যালয় ভবনের সামনে থেকে পলাশকে আটক করেছে।
মান্দারী ইউনিয়নের মিরাজ হোসেন রাসেল বলেন, ৭ মাস আগে আমি আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো আমার এনআইডি কার্ড হয়নি। আমার সঙ্গে যারা আবেদন করেছে টাকা দেওয়ায় তারা আইডি কার্ড পেয়ে গেছেন। ঘটনাটি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছে তার কার্যালয়ে দুর্নীতি হয় না। কিন্তু তার কার্যালয়ে কর্মরত এরশাদ প্রতিটি কাজের জন্য দালালদের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা করে নেন।
ইউপি সদস্য মমিন উল্যাহ বলেন, দালালকে আটক করে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। আটক পলাশ জানিয়েছেন প্রত্যেকটি কাজের জন্য তার কাছ থেকে এরশাদ ৩ হাজার টাকা করে নেয়। টাকা পেলে এরশাদ কাজগুলো দ্রুত করে দেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এরশাদ হোসাইনকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে একজন আটক করে আনা হয়েছে। তিনি এখন থানা হেফাজতে রয়েছে। বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার শফিকুর রহমান বলেন, দালাল আটকের বিষয়টি আমি শুনেছি। ইউপি সদস্য মমিন সদর নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত এরশাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।