একটা সময় ছিল গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এক একটি করে ধানের গোলা ছিল, হোক কৃষক হোক বর্গা চাষী অথবা জমির মালিক। এমনকি গ্রামের বিয়ে-শাদী পর্যন্ত হতো গৃহস্থের ঘরে ধানের গোলা আছে কিনা সেটা দেখে। কিন্তু কালের আবর্তে অটো রাইস মিল আর আমদানিকৃত চালের কারণে এখন সেই ধানের গোলা আর দেখা যায় না।
এর অবশ্য অন্য কারণও আছে বৃষ্টিসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সেই সঙ্গে শ্রমিক সংকটের কারণেও ধান শুকিয়ে গোলায় রাখার মত কষ্টসাধ্য কাজ সাধারণত কেউ করতে চায় না। এ কারণেই ধান উঠার সঙ্গে সঙ্গে কাঁচা ধানই সকলে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিপরীতে অধিক দামে নগদ টাকায় চাল কিনে খাচ্ছে।
ফায়দা লুটছে এক শ্রেণীর মৌসুমী ফরিয়ারা এবং মিল মালিকেরা। ধান ওঠার মৌসুমের শুরুতেই সকল ধান চলে যাচ্ছে মিল মালিক এবং মজুদদারদের গোডাউনে। এমনিতেই ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না সেই সঙ্গে মণ প্রতি নিচ্ছে ৪২ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত। স্থানীয়ভাবে ধানের বাজার দর ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত। সরকারি বেধে দেওয়া ধানের ন্যায্য মূল্য কাগজে-কলমেই রয়ে যায়। এর সুবিধা পায় না স্থানীয় কৃষক, বর্গাচাষী কিংবা জমির মালিকেরা।
হঠাৎ যদি কোনো কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা জাতীয় কোন সংকঠ দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে কয়েকটা দিন খাদ্য সংকট মেটানোর মতো ধান মজুদ ব্যবস্থা নেই স্থানীয় মানুষের হাতে। যা দুর্ভিক্ষের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোন সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় ভাবে ধানের মজুদকরন অত্যন্ত জরুরী।