আদিল সরকার, ইবি : মাত্র কদিন হলো হামাগুড়ি থেকে দাড়াতে শিখেছে। এখনো মায়ের কোল ছাড়েনি শিশুটি। পড়নে ছোট্ট একটি সাদা গেঞ্জি। যেখানে ফুটফুটে লিখা ‘কোটা প্রথার কবর চাই’। এভাবেই মহাসড়কে দাড়িয়ে আছে সে। পাশে বসা সংগ্রামী সেই মা। যার প্রতিবাদী চোখ জ্বলমল করছে প্রতিনিয়ত। হাতে কোটা বিরোধী প্লাকার্ড ও মুখে স্লোগানের গর্জন। পেটের সন্তানকেও দাড় করিয়ে দিয়েছেন হার না মানার স্তম্ভে। যা জাতির বিবেককে জাগ্রত করতে যথেষ্ট বলে মনে করেন তিনি।
বুধবার কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিশুসন্তান ও পরিবারসহ সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদস্বরুপ আমার সন্তানকে আজ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। সন্তানও বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের স্বচক্ষে দেখুক। তরুণ প্রজন্ম যে বৈষম্যের মধ্যে পড়ে আছে, আমি সেই বৈষম্যের দ্রুত অবসান চাই। একজন নারী হয়েই বলছি, নারী কোটার কোন প্রয়োজন নেই। কেননা নারীরাও সবদিক দিয় পুরুষের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। মেধার সঠিক মূল্যায়নই ন্যায়বিচার বলে মনে করি।
এদিকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গাছের গুঁড়ি ফেলে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এসময় যান চলাচল বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের মহাসড়কে ফুটবল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়। এছাড়াও তাদেরকে স্বরচিত গান, কবিতা, গীতিনাট্য, অভিনয়ের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরতে দেখা যায়। সেই সাথে দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমন্বয়ক বলেন, আমরা কোটাপ্রথা পুরোপুরি বাতিল চাচ্ছি না। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি জানাচ্ছি। সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ যে স্থিতাবস্থা জারি করেছে এটা আমাদের দাবির অংশ নয়। তাই এ রায়ের বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। আমাদের এক দফা দাবি যতদিন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।