প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। সন্ত্রাস ছাড়া দলটি কিছু বোঝে না। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে আখাউড়া-লাকসাম ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তাদের কাজ ধংস করা। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারাই হলো তাদের আন্দোলন।
বিএনপির আন্দোলনে বাধা দেয়া হচ্ছে না। তবে আন্দোলনের নামে আবারও মানুষের ক্ষতির চেষ্টা করলে ধরে ধরে সকলের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য এ সরকারকে আবার ক্ষমতা আনতে হবে জনগণকে। বিএনপি মানুষকে হত্যা ও লুটপাটের রাজনৈতি করে। তারা সমাবেশ করছে, আমি বাধা দিচ্ছি না। যদি বিএনপি- জামায়াত আন্দোলনের নামে আবার বাস-ট্রেনে আগুন দেয়, তাহলে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় এ দেশে প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ দারিদ্র ছিল। স্বাধীন দেশকে জাতির পিতা প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ অনেক কষ্ট করে পূনর্গঠন করছেন তিনি। অথচ একটি চক্র ও যারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না তারা জাতির পিতাকে হত্যা করে।
রেলপথের উন্নয়নের সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখনই ক্ষমতায় আসি, তখনই রেলওয়ের উন্নয়ন করি, অথচ বিএনপি ক্ষমতায় এসে রেল চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলো, তারা মনে করতো রেল লোকসান, তাই বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে তারা বন্ধ করে দেয়, আমরা ক্ষমতায় এসে আলদা রেল মন্ত্রণালয় গঠন করি। এছাড়া, আমরা বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল লাইন স্থাপন করি।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপির দুঃশাসন ও অপকর্মের কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে যখন নির্বাচন হয়, বিএনপি তখন জানতো তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না, এটা জেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপি সন্ত্রাসী তাণ্ডব শুরু করে। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। জনগণ তাদের আর দেখতে চায় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে এসে রেলের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়। আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন চালুর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নতুন যুগের সূচনা হলো। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না। কমে আসবে ট্রেনযাত্রার সময়।
আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ হওয়ায় ৩২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরো অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত হলো। ডুয়েল গেজ হওয়ায় এ পথে এখন মিটার গেজ ও ব্রড গেজ এ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে।
তথ্যসূত্র বলছে, লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করতে ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় একনেকে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ।
এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।
২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয় নির্মাণ কাজ। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশ ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।