লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য যাত্রী সেজে চোখে-মুখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে ও ছুরি দিয়ে আঘাত করায় রিপন হোসেন নামে এক চালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ছিনতাইকৃত অটোরিকশাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রামগঞ্জ থানায় এ আয়োজন করা হয়। এসময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রামগঞ্জের দরবেশপুর এলাকার মোক্তার হোসেন দেওয়ানের ছেলে আলভী দেওয়ান হৃদয়, নোয়াখালীর চাটখিলের মধ্য সোন্দরপুর গ্রামের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে মো. সুজন ও নোয়াখালীর চরজব্বর থানার পশ্চিম চরজব্বর গ্রামের আলী আজগর হোসেনের ছেলে বেলাল হোসেন।
এদের মধ্যে হৃদয়কে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুজনকে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নোয়াখালীর সুন্দরপুর এলাকা থেকে ও বেলালকে বিকেলে চরজব্বর থানার কাঞ্চন বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন ভিকটিম রিপনের মেয়ে জামাই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর ) ভোরে রিপন রামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী হৃদয়কে নিয়ে পৌরসভার আঙ্গারপাড়া এলাকায় যায়। একপর্যায়ে হৃদয় রিকশা থেকে নেমে সামনে রিপনের সঙ্গে বসে। এসময় হৃদয় তার চোখে মরিচের গুড়া মেরে রিকশাটি ছিনতাই করে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় বাধা দিলে ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে উপুর্যপুরি আঘাত করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় পেলে রেখে হৃদয় রিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। রিকশাটি সুজনের কাছে রেখে ১ হাজার টাকা নিয়ে হৃদয় নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে চলে যায়। পরে সুজন রিকশাটি বেলালের কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এরমধ্যে সুজন বিকাশের মাধ্যমে হৃদয়কে ২৫ হাজার টাকা পাঠায়। ঘটনার সময় ব্যবহৃত ছুরিটি রামগঞ্জের দরবেশপুর ইউনিয়নের আলীপুর এলাকার খাল থেকে উদ্ধার করা হয়। বেলালের কাছ থেকে রিকশাটিও জব্দ করা হয়েছে।
রিপন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দিবাগত রাত ২ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি রামগঞ্জ পৌর শহরের কাজিরখীল এলাকার মনির উদ্দিন বেপারী বাড়ির আবদুল কাদেরের ছেলে।
সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ভিকটিমও মারা গেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার তথ্য অনুযায়ী অন্য দুইজনকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদেরকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সৌপর্দ করা হয়েছে।