আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের রেকর্ডগড়া ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১০২ রানে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এক ম্যাচে রেকর্ড তিন সেঞ্চুরিতে লঙ্কান বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ৪২৮ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা। তবে কুশাল মেন্ডিস ও চারিথ আশালঙ্কার ব্যাটে প্রতিরোধ গড়লেও জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিল না।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা এতোদিন পর্যন্ত ছিল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার দখলে। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দুইদল মিলিয়ে করেছিল ৭১৪ রান। অজিদের করা ৩৮১ রানের জবাবে ৩৩৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। বড় ব্যবধানে সেই রেকর্ড ভেঙেছে শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে করেছে ৭৫৪ রান।
আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে দলীয় সর্বোচ্চ ৪২৮ রানের রেকর্ড গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশাল রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা।
প্রোটিয়াদের বিশাল রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার নিশাঙ্কাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ওয়ানডাউনে নামা কুশাল মেন্ডিস তাণ্ডব চালায় দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের ওপর। মাত্র ২৫ বলে ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি পূরণ করেন লঙ্কান উইকেটকিপার ব্যাটার। আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৪টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৭৬ রান করেন। দ্রুতই বিদায় নেন সামারাবিক্রমা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
ষষ্ঠ উইকেটে ৮২ রানের জুটি গড়ে লঙ্কানদের ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করে আশালঙ্কা ও অধিনায়ক শানাকা। কিন্তু ৭৯ রানে এনগিদির বলে সাজঘরে ফেরেন লঙ্কান ব্যাটার। তরুণ অলরাউন্ডার দুনিথ ওয়াল্লাগে কোয়েটজের বলে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন। অধিনায়ক শানাকা ফিফটি তুলে নিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। আউট হওয়ার আগে ৬৮ রান করেন শানাকা। টেলএন্ডারদের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ৩২৬ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। প্রোটিয়াদের হয়ে কোয়েটজে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া ইয়ানসেন, মাহারাজ ও রাবাদা ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস হেরে দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ছাড়া বাকি ব্যাটারা চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটায় শ্রীলঙ্কার বোলারদের ওপর। কুইন্টন ডি কক, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও অ্যাইডেন মার্করাম তিন ব্যাটার সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ১০ রানের মাথায় টেম্বা বাভুমাকে ফেরান মাদুশাঙ্কা। দ্বিতীয় জুটিতে ২০৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ডুসেন-ডি কক। ৩১তম ওভারে পাথিরানাকে চার মেরে ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। পরের বলেই বেবি মালিঙ্গার বলে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে তালুবদ্ধ হন প্রোটিয়া ওপেনার।
ডি কক ফিরলে মার্করামকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ডুসেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূরণ করে ওয়েল্লাগের বলে আউট হন প্রোটিয়া ব্যাটার। ক্রিজে নেমে তাণ্ডব চালান মার্করাম ও ক্লাসেন। ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩২ রানের ক্যামিও খেলে আউট হন ক্লাসেন। শেষ ১০ ওভারে লঙ্কান বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান মার্করাম ও মিলার।
বিশাল স্কোরের দিনে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন মার্করাম। ৪৯ বলে সেঞ্চুরির পথে ২০১১ বিশ্বকাপে গড়া আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও ব্রাইনের রেকর্ড ভাঙেন প্রোটিয়া ব্যাটার। ৫৩ বলে ১০৬ রানে মাদুশাঙ্কার বলে আউট হন মার্করাম। মাত্র ২১ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন মিলার। শেষ ১০ ওভারে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা। লঙ্কানদের পক্ষে দিলশান মাদুশঙ্কা ৮৬ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন।