দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের ওপর সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। বিএনপির পাঁচ নেতার দুর্নীতির পৃথক মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত করে এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে আপিলকারীদের সাজা স্থগিত করার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর নিম্ন আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে আপিলে বিচারাধীন অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে রায় দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেওয়া হয়। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ওই সময় বলেছিলেন, পাঁচজনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে আদালত সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন- সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হলে আপিল বিভাগে তা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানই এখানে প্রাধান্য পাবে।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, দুই বছরের বেশি সাজা হলে সাজা মাথায় নিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে আদালত অভিমত দিয়েছেন। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন, আবেদনকারী জামিনে আছেন, জরিমানার আদেশ স্থগিত হয়েছে- এসব দণ্ড বা সাজা স্থগিতের যুক্তি হতে পারে না বলে জানিয়েছেন আদালত। সংবিধান সর্বোচ্চ আইন। দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্তদের নির্বাচন করার বিষয়ে সংবিধানের ৬৬ (২)(ঘ) অনুচ্ছেদে বাধা আছে।
বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেনের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুসারে দণ্ড স্থগিতের সুযোগ নেই বলেছেন আদালত। দণ্ড ও সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আদালতে কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তির করা আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ওই ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলেও বলেছেন আদালত।