আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি ও ভাষাশিল্পী কাজী জহিরুল ইসলাম এখন ঢাকায়। তাকে ঘিরে কবিতাপ্রেমীদের ছোটো-বড়ো নানান আড্ডা জমে উঠেছে শহরের এখানে-সেখানে। সেইসব আড্ডায় যোগ দিচ্ছেন নবীন-প্রবীন কবি, লেখক, সাংবাদিকেরা। তিনি শুধু বড়ো মাপের একজন কবিই নন, একজন ভালো বক্তা এবং নৈতিক চর্চায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষ। তার সদা হাস্যোজ্জ্বল ও অমায়িক ব্যবহার তাকে সকলের কাছে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে, তিনি হয়ে উঠেছেন বাঙালিদের প্রিয় কবি।
সম্প্রতি কাজী জহিরুল ইসলামের নতুন একটি কবিতার বই ‘ভোরের হাওয়া’ প্রকাশ করেছে জলধি। জলধির সহযোগী প্রতিষ্ঠান কবিতা ক্যাফেতে ২৬ অক্টোবর কবিকে ঘিরে প্রকাশকের পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল থেকে শুরু হয়ে তা চলবে রাত দশটা পর্যন্ত। এই সময়ে কবির প্রকাশিত ৯০টি গ্রন্থের একটি স্বল্পকালীন বইমেলা হবে; পাঠক, ভক্তরা অটোগ্রাফসহ বই সংগ্রহ করতে পারবেন। কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করবেন আবৃত্তিমেলার শিল্পীরা। কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা নিয়ে কথা বলবেন দেশের জনগ্রিয় সব কবি ও সাহিত্যিক।
উল্লেখ্য, কাজী জহিরুল ইসলাম জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা। জাতিসংঘে কাজ করার সুবাদে চষে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। নিজের চোখে দেখা পৃথিবীর তাবত সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে তার লিখায়। পৃথিবীর বিখ্যাত সব কবি সাহিত্যিকের সান্নিধ্য যেমন পেয়েছেন তেমনি বিনিময় করেছেন তার লিখার বিষয়বস্তু, মর্মবেদনা, দুঃখ-কষ্ট আর আনন্দের উচ্ছাস।
আন্তর্জাতিক অনেক সাহিত্য মঞ্চে স্পীকারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। নৈতিকতা আর মানবতার ওপর তার বক্তব্যগুলো সারা পৃথিবীর অনেক মানুষের কাছেই আজ প্রশংশিত। ইংরেজীতে অনূদৃত হয়েছে তার অসংখ্য বই। সেসব বইয়ের লিখায় ফুটে উঠেছে প্রেম-ভালোবাসা, ধনি-গরীবের ভেদাভেদ, নির্যাতিত তৃতীয় বিশ্ব আর মানবতা। মাইকেল মধুসূধনের পর তিনিই একমাত্র বাংলাদেশী কবি যিনি নিজের দেশ এবং দেশের সমৃদ্ধ সাহিত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কারও অর্জন করেছেন তিনি।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘উত্থানপর্বের গল্প’, ‘শেষ বিকেলের গান’, ‘বিহঙ্গপ্রবণ’, ‘ফিরে যাও নদী’,‘রাস্তাটি ক্রমশ সরু হয়ে যাচ্ছে’, ‘এইডেলভাইজ’, ‘কাকাওয়ের দেশে’, ‘কসোভোর পথে-প্রান্তরে’, ‘জন্মান্ধ কৌরব’, ‘নির্বাচিত ১০০ কবিতা’, ‘নন্দনতত্ত্বের ডার্করুম’ ও ‘আড্ডার গল্প’ অন্যতম।