আজ ৩১ তারিখ শাহবাগে অবস্থান করে কর্মসূচী ঘোষনা করলেন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, অনুদানপ্রাপ্ত বিলডাকিনি চিত্রনাট্যর কপিরাইট প্রতারনার শিকার, ভুক্তভোগী মনজুরুল ইসলাম মেঘ।
শাহবাগ থেকে মনজুরুল ইসলাম মেঘ ঘোষনা করেন, আগামি ৪ তারিখ বাংলা একাডেমি তে স্মারকলিপি প্রদান করবো, ৬ তারিখ বাংলা একাডেমির সামনে অবস্থান কর্মসূচী করবো। তারপেও যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে ১০ তারিখ থেকে বাংলা একাডেমি ও বইমেলার সামনে লাগাতর আমরন অনশন করবো। যতক্ষণ না নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ওরফে ড. জাহাঙ্গীর আলম এর বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ততক্ষণ।
কর্মসূচী ঘোষনার সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেদী হাসান, সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম। এডভোকেট ফুয়াদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক গণতন্ত্রী পার্টি।
ভুক্তভোগী মনজুরুল ইসলাম মেঘ জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারী অনুদান প্রাপ্ত চলচ্চিত্র “বিলডাকিনি” চিত্রনাট্য আমার লেখা, অনুদানের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে এবং অনুদানপ্রাপ্ত চিত্রনাট্য আমার নামে কপিরাইট অধিদপ্তরে নিবন্ধীত হয়েছে। তারপরো চিত্রনাট্য চুরি করে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ওরফে ড. জাহাঙ্গীর আলম (অতিরিক্ত সচিব) আংশিক পরিবর্তন করে আমার নাম বাদ দিয়ে নিজের নামে চালিয়েছে।
২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চলচ্চিত্র অনুদান প্রদান করা হয়। গেজেট নং ১৫.০০.০০০০.০৪১.২৪.০০১.২০.১৩৮ উক্ত গেজেট ঘোষণার আগে তৎকালীন তথ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি আমার সাক্ষাৎকার নিয়ে আমার নাম মনজুরুল ইসলাম পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। উক্ত গেজেটের সিরিয়াল নং ১৬ বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের পরিচালক মনজুরুল ইসলাম, আমি নিজে। গেজেটে ঘোষিত বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ আমার রচিত। আমার লেখিত চিত্রনাট্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে এবং বাংলাদেশ কপিরাইট অধিদপ্তরে নিবন্ধিত হয়ে সনদ গ্রহণ করেছে। কপিরাইট নিবন্ধন নং CRL-২৩৪৫৮।
জাল-জালিয়াতির মাধ্যম ড. জাহাঙ্গীর আলম তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের পরিচালকের পদ থেকে আমাকে অবৈধ ভাবে বঞ্চিত করে উক্ত গেজেটের সিরিয়াল নং ৩ এ উল্লেখিত ফজলুল কবীর তুহিন কে দিয়ে বিলডাকিনি ও গাংকুমারী নামে দুটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন, যা চলচ্চিত্র অনুদান আইন বিরধী, অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্র বিরধী অপরাধ। আইনত একই গেজেটের দুটি চলচ্চিত্র, একই ব্যক্তি পরিচালনা করতে পারে না।
আরো উল্লেখ্য, জনাব নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারী অর্থ আত্নসাতের জন্য নিজের স্ত্রী খাতিজা বেগম মিতাকে বিলডাকিনি চলচ্চিত্রের নির্বাহী প্রযোজক এবং ঘনিষ্ঠবন্ধু জনাব আব্দুল মমিন খানকে প্রযোজক বানিয়েছেন, চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা অনুযায়ী একজন প্রযোজকের যে যোগ্যতা থাকার কথা সেটি উল্লেখিত ব্যক্তির নেই। নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর যখন আমার থেকে চিত্রনাট্য নিয়েছিলেন তখন বলেছিলেন একজন পেশাদার চলচ্চিত্র প্রযোজককে দিয়ে সিনেমা প্রযোজনা করাবেন। কিন্তু অনুদান গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পরে জানতে পারি তিনি আসলে চলচ্চিত্র প্রযোজক নয়। আব্দুল মমিন খান চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাটা সলিউশন নামীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, যা চলচ্চিত্র অনুদান পাওয়ার অযোগ্য প্রতিষ্ঠান। তারপরো অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে চলচ্চিত্র অনুদান হস্তগত করেছে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। যা শাস্তি যোগ্য অপরাধ। অথচ নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীরগং আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। সৃজনশীল কাজ চুরির অভিযোগ যার নামে আছে, এমন ব্যক্তির হাতে বাংলা একাডেমির মতন প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার তুলে দেওয়া মানে দেশের প্রচলিত আইন ও ন্যায় বিচারে বাধা দেওয়ার সামিল।
অতএব অভিযুক্ত নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ওরফে ড. জাহাঙ্গীর আলম নামীয় ব্যক্তির বাংলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৩ বাতিল করে, নিরপেক্ষ একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে আমার অভিযোগ নিষপত্তি করার অনুরোধ জানাচ্ছি।