dailynobobarta logo
আজ শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | কনভার্টার
  1. অন্যান্য
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. গণমাধ্যম
  6. ধর্ম
  7. প্রযুক্তি
  8. বাংলাদেশ
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ নিবন্ধ
  11. লাইফস্টাইল
  12. শিক্ষা
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সারাদেশ
  15. সাহিত্য

আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিবেদক
আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার
শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ | ১২:১৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারে প্রথমেই আমাদের জানা প্রয়োজন, বিজ্ঞান কি? ল্যাটিন শব্দ সায়েনটিয়া থেকে ইংরেজি সাইন্স (Science) শব্দটি এসেছে। যার অর্থ হচ্ছে জ্ঞান।বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ বিশেষ জ্ঞান। অপরদিকে সভ্যতা বলতে আমরা বুঝি মানুষ তার জীবনধারণের ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকল্পে যে যান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সংগঠন সৃষ্টি করেছে তারই সমন্বিত রূপ। বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন।

প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে শিক্ষার হার বৃদ্ধি কল্পে সরকার প্রাণান্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শতভাগ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির উদ্যোগ প্রায় শতভাগ সফলতার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ভর্তির হার শতভাগের কাছাকাছি পর্যায়ে উন্নীত করার পর সরকার বর্তমানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,এনসিটিবি ও নেপ এর সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

শিক্ষকদের দক্ষ করে তোলার জন্য বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে। শিক্ষকগণ প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান বিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োগ করছে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণের সাথে বিজ্ঞান শিক্ষার উপর জোর দেওয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে সার্বজনীন এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে শতভাগ শিক্ষার্থী উচ্চ বিদ্যালয়ে, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ার সুযোগ পায় না। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে অনেকেই বিভিন্ন কর্মে নিযুক্ত হয় এবং দারিদ্র্যতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে তার শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করতে বাধ্য হয়। অনেকে প্রবাসে কর্মের সন্ধানে চলে যায়। এই প্রবাস গমনকারী শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার জ্ঞান না থাকার কারণে প্রবাসে তাদের নেহায়েত শ্রমিক হিসাবেই কাজ করতে হয়। অন্য যেকোনো দেশের শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতনে চাকরি করতে হয়। এজন্য প্রাথমিক পর্যায় থেকেই বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার উপর জোর দিলে দেশে এবং বিদেশে কর্মসংস্থান এবং বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কাজের সাথে তারা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারবে। অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন কাজ এর যেভাবে সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের দেশে এখনো সেই পর্যায়ের বিজ্ঞানভিত্তিক দক্ষ প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি হচ্ছে না। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষা গ্রহণের ফলে তারা কলকারখানা সহ বিজ্ঞান ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারছে না । এজন্য অদক্ষ জনবল বাড়ছে কিন্তু দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা বা দক্ষ লোকবল সৃষ্টি হচ্ছে না।

জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরে করবে বলে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে চলছে জোড় প্রচেষ্টা। আমরা জানি, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বড় উৎস প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ। যেসব শ্রমিক বিদেশে যান তাদের বেশিরভাগই উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে অদক্ষ। তারা সাধারণত নির্মাণ কাজ, খাদ্য রেস্তোরাঁ, দোকানপাট এবং গৃহকর্মে নিয়োজিত থাকেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিশ্ব বাজারে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দক্ষ ও মেধাভিত্তিক শ্রমবাজারে প্রবেশের লক্ষ্য নিয়ে এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন নিশ্চিত করতে হবে। আর এক্ষেত্রে প্রথমেই বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার উপর।

বর্তমান বিশ্ব ও তার প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। বিজ্ঞান শিক্ষার সাথে জাতির উন্নতি অনেকাংশে নির্ভরশীল অর্থাৎ বিজ্ঞান শিক্ষাই সভ্যতা বিনির্মাণের প্রধানতম হাতিয়ার। এজন্যই বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আদিমকালে মানুষ গাছের চামড়া লতাপাতা ইত্যাদি জড়িয়ে শীত নিবারণ ও লজ্জা নিবারণ করত। গাছের ডালে বা মাটির গুহায় জীবন যাপন করতো। তাদের নিরাপত্তা এবং পশু পাখির আক্রমণ এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন জ্বালিয়ে রাখতো। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে নতুন নতুন আবিষ্কার হয়েছে। পরিধান করার কাপড়, বসবাস করার ঘরবাড়ি, দালানকোঠা নির্মাণ সবই বিজ্ঞানের অবদান‌। মানুষের পড়ালেখা করার জন্য আবিষ্কার হয়েছে লিখন পদ্ধতি, বই পুস্তক, খাতা কলম ইত্যাদি। এর মাধ্যমে মানুষ জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞানচর্চা করতে পারে। দূর দূরান্তে যাতায়াতের জন্য আবিষ্কার করেছে বাস, ট্রেন, হেলিকপ্টার, বিমান ইত্যাদি। এগুলো সবই বিজ্ঞানেরই অবদান।

তথ্য প্রযুক্তি আবিষ্কার করার ফলে মানুষ মুহূর্তেই সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের খবরা-খবর মুহূর্তেই লাইভ টিভিতে বা মোবাইলে দেখতে পাওয়া যায়। ইন্টারনেট আবিষ্কার বিজ্ঞানের এক অসাধারণ বিস্ময়। এসবই বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অবদান। বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির কৃষি, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, লেখাপড়া সবকিছুই বিজ্ঞানের অবদান।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো বর্তমানে কাগজ বিহীন অফিস এবং কাগজবিহীন মুদ্রায় রাষ্ট্র পরিচালনার চিন্তা করেছে । অনেক দেশ ইতিমধ্যে এগিয়েছে অনেক দূর । বর্তমান সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে প্রাথমিক স্তর থেকেই বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার সূত্রপাত করা প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে অন্যতম পদক্ষেপ।

এজন্য প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চা ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক।

লেখক: আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ঘিওর, মানিকগঞ্জ।

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ - মানিকগঞ্জ

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com