গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে ২০ আগস্ট ২০২৪ মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, রুদ্র সেন সহ সকল শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান, আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, নিহত ও আহতদের পরিবারকে দ্রুত পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শেষে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ১৩ দফা পেশ করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)’র মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডাঃ সামছুল আলম ও সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের ১৩ দফা হলো—
১. রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের কোন কার্যক্রম জনগণের নিকট গনবিরোধী মনে হলে তার প্রতিবাদে সভা—সমাবেশ বিক্ষোভ শর্তহীন করতে হবে।
২. রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে সংবিধানের ৪৮(৩) বাতিল করতে হবে। কেননা এই অনুচ্ছেদের প্রদত্ত ক্ষমতা বলে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী কে জবাবদিহিহীন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে, যা কিনা স্বৈরতান্ত্রিক।
৩. দেশ থেকে পুঁজি পাচার বন্ধ করতে হবে। পাচারকৃত সকল অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। পুঁজি পাচার কারিদের কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য সময়োপযোগী আইন করতে হবে এবং তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। পুঁজি পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির সকল ব্যাংক হিসাব জব্দ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।
৪. সংবিধান থেকে ঔপনিবেশিক নিপীড়নমূলক সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে। ঔপনিবেশিক ঔপনিবেশিক আইনের সাংবিধানিক বৈষম্য বাতিল করতে হবে। জনগণের মৌলিক নাগরিক অধিকার বিরোধী কোন আইন প্রণয়ন সাংবিধানিক ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. শ্রমজীবী মানুষের শ্রমসৃষ্ট সম্পদ কে জাতীয় অর্থনীতিতে ধরে রেখে সর্বোচ্চ উৎপাদনশীল ব্যবহার করতে হবে।
৬. মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা পত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার সাংবিধানিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. জাতীয় সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যেন জনগণের জন্য কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিত করার স্বার্থে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০ সম্পুর্ন বাতিল করতে হবে।
৮. বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার কে পদত্যাগে বাধ্য করে, রাজপথে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সমূহের প্রতিনিধি কে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। [বিঃদ্রঃ ৮ নং দফাটি ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান সফল হয়েছে]
৯. কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের মূল্য নির্ধারণে জাতীয় কমিশন গঠন করতে হবে।
১০. শ্রমিকদের জাতীয় মজুরি ঘোষণা করার জন্য নতুন করে আইন করতে হবে।
১১. ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে হবে।
১২. আইন দ্বারা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।
১৩. দেশের সকল জাতিসত্তার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান সহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাঙ্গন থেকে সকল নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে হবে।