মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজের দুইদিন পর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ইমান আলীর মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে নিহতের গ্রামে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে শিবালয় উপজেলার বোয়ালী এলাকার একটি গাছ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে শিবালয় থানার পুলিশ।
নিহত ঐ ব্যবসায়ীর নাম ইমান আলী (৬৫)। সে ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের শাইলকাই গ্রামের মৃত হারান শেখের ছেলে। ঘিওর বাজারের পঞ্চরাস্তা মোড় এলাকায় তার হার্ডওয়্যারের দোকান রয়েছে। গত রোববার (২৬ নভেম্বর) তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এবাপারে তার মেঝ ছেলে মিলন হোসেন রোববার (২৬ নভেম্বর) ঘিওর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর আগে ২৫ দিন আগে ইমান আলীকে অপহরণও করা হয়েছিল। পরে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে পাশ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ঘিওর থানায় মামলা হয়েছিল।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ আলম লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসাবে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছে পিবিআই। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের মেঝ ছেলে মিলন হোসেন জানান, তার বাবা রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। কোথাও খুঁজে না পেয়ে ঘিওর থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে পুলিশের মাধ্যমে খবর পান তার বাবার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে হাসপাতাল মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করেন। আমার বাবার পড়নের লুঙ্গী-শার্ট ছেঁড়া ও শরীরে ক্ষত ছিল। তার অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর তার বাবার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। যাতে সবাই আত্মহত্যা মনে করেন।
মিলন আরও জানান, তার বড় ভাই কামাল হোসেনের কাছে গ্রামের রিপন প্রধান নামে একজন দেড় লাখ টাকা পেতেন। সুদে আনা ওই টাকার জন্য তার বাবাকে প্রায়ই চাপ দিত সুদ কারবারি রিপন প্রধান। তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। গত ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে রিপনের কথা বলে অজ্ঞাত তিন যুবক তাকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আর খুঁজে পাওয়া যায় না। পরদিন রাতে দৌলতপুর উপজেলার ধামসর এলাকায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রিপনসহ অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে ঘিওর থানায় মামলা করা হয়। এরপর থেকে আসামিরা নানাভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল তাদের।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, ইমান আলীর অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়েও থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে আছেন বলেও জানান ওসি।