লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
কুয়াশা ঘেরা ভোরে লক্ষ্মীপুরে হয়ে গেলো পিঠা উৎসব। নিজ হাতে বানানো ২’শ বিশ রকমের পিঠার পসরা সাজিয়ে শতাধিক স্টল নিয়ে বসেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। দারুণ এ আয়োজন দেখতে ও পিঠার স্বাদ নিতে ক্যাম্পাসে ছিল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণা। বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা মানুষজন হৃদয় হরণ, মাছ পিঠা, ফুলি পিঠা, নারিকেল পিঠা ও পাটি সাপটাসহ নানান ধরণের পিঠার স্বাদ নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে এ আয়োজন করা হয়। প্রায় এক যুগ ধরে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ পিঠার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে শীতের মৌসুমে এ আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। দিনব্যাপী এ আয়োজনে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা থাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে।
ফুলে সজ্জিত ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া। এসময় লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল, লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজ উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা পিঠার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন আগত অতিথিরা।
পিঠা উৎসবে ঘুরে ঢেঁকির বৈঠক খানা, নোয়া চাইলে নোয়া হিডা, পিঠা আলাফ, হিম চাওয়া চন্দ্রফুলি, পিঠা আড্ডা, টুনটুনিদের পিঠা ঘর ও পিঠা অরণ্যসহ বিভিন্ন নামে শতাধিক দোকান দেখা যায়। এতে ডাল পাকন, শুকনা পিঠা, লতা পিঠা, শামুক পিঠা, সাকুর পিঠা, পদ্মার ইলিশ পিঠা, পাটি সাপটা, পান্তুয়া, জেলি কেক, বরফি, দুধ চিতল, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, ঝুনঝুনি পিঠা, মুগ পাকন, ক্ষীর পাটি সাপটা, হৃদয় হরণ ও নারিকেল বেলি পিঠাসহ দুই শতাধিক পিঠা দেখা গেছে। একেকটির স্বাদ একেক রকম। একেকটি দোকানে ৫০ ধরণের পিঠা থাকলেও সবগুলোর নামও অজানা শিক্ষার্থীদের মাঝে।
পিঠা উৎসব দেখতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ পৌষ মাসে পিঠা উৎসব হয়ে থাকে। তবে শীত মানেই বাড়িতে বাড়িতে পিঠা উৎসব। যদিও এখন আর গ্রাম ছাড়া শহরে পিঠা দেখা যায় না। খাওয়াতো অনেকে দূরে, অনেক পিঠার নামও এখন মনে পড়ে না। এখন শহরের মানুষের একমাত্র ভরসা রাস্তার পাশে বানানো চিতই আর ভাপা পিঠা। মফস্বল শহরেও একই অবস্থা। ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের আয়োজিত পিঠা উৎসব প্রশংসনীয়। কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। কুয়াশা ঘেরা সাজ সকালে পিঠা উৎসবটি আনন্দদায়ক ছিল।
প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজ বলেন, প্রায় ১ যুগ ধরে শীতকালে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছি। এবার শতাধিক স্টলে ২’শ বিশ রকমের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছে শিক্ষার্থীরা। পিঠা নিয়ে বসেছে। আয়োজনটি শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে উপভোগ করেছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজনের উপস্থিতি সরব ছিল।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, পিঠা উৎসব অসাধারণ সত্যিই আমি অভিভূত। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধারণে এ আয়োজন প্রশংসনীয়। উৎসবটি পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে।