dailynobobarta logo
আজ মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | কনভার্টার
  1. অন্যান্য
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. গণমাধ্যম
  6. ধর্ম
  7. প্রযুক্তি
  8. বাংলাদেশ
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ নিবন্ধ
  11. লাইফস্টাইল
  12. শিক্ষা
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সারাদেশ
  15. সাহিত্য

ঘুচে যাক বন্ধ্যাত্ব, ঘর জুড়ে আসুক আলো

প্রতিবেদক
মোঃ মজিবর রহমান মুজিব
মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ১:১৬ অপরাহ্ন
বন্ধ্যাত্ব

নারীর সকল দুখ, ব্যাথা-বেদনা মা হতে না পারা। সকল আপন হয়ে যায় পর, কষ্টে পাজর ভাংগে। সন্তানের মা হতে না পারার জ্বালা। এবার আসি টেস্টিউব বা আধুনিক চিকিৎসা কিভাবে সন্তান না হওয়া বাবা-মাকে স্রষ্টার আশির্বাদ নিয়ে সন্তানধারণের ব্যবস্থা করে থাকে।

প্রকৃতপক্ষে ভ্রণ টেস্টটিউবে বেড়ে ওঠে না, বাড়ে মায়ের জরায়ুতেই আর দশটি বাচ্চার মতোই। এ পদ্ধতিতে পুরুষের শুক্রাণু আর নারীর ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণটুকুই শুধু স্বাভাবিক পদ্ধতিতে না হয়ে দেহের বাইরে হয়। স্ত্রীর ডিম্বপাত বা ওভুলেশনের সময় ডিম্বাণু যখন পরিপক্ব হয়, তখন তা ডিম্বাশয় থেকে বের করে আনা হয় ল্যাপারোস্কপি নামের এক পদ্ধতির মাধ্যমে। যে সব নারীর ডিম্ব উৎপাদনে সমস্যা, তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে ডিম্ব উৎপাদনে সহায়তা করে এমন কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

ল্যাপারোস্কপি ছাড়াও যোনিপথে ছোট্ট একটি অপারেশনের মাধ্যমেও ডিম্বাণু সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহের পর ডিম্ব রাখা হয় টেস্ট টিউব অথবা বিশেষ ধরনের একটি পাত্রে যার নাম পেট্রিডিশ। এদিকে স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। পরে ডিম্বাণুসহ সেই ডিশ বা টিউবে শুক্রাণু রাখা হয়। এ সময় একটি ডিম্বাণুর বিপরীতে থাকে প্রায় পঁচাত্তর হাজার শুক্রাণু। এরপর ডিশ বা টিউবটি কয়েক ঘণ্টা রাখা হয় ইনকিউবিটরে।

ইনকিউবেটরের পরিবেশ রাখা হয় জরায়ুর অনুরূপ। এখানে উপযুক্ত শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর নিষেকের ফলে মানব ভ্রুনের সৃষ্টি হয়। তারপর বিশেষ নলের সাহায্যে স্ত্রীর জরায়ুতে রাখা হয় ভ্রণটি। অনেক ক্ষেত্রে, ভ্রণকোষটি জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের আগে বিশেষ প্রক্রিয়ায় হিমায়িত করে রাখা হয় কিছুদিন।

বিশেষতঃ যাদের ক্ষেত্রে ডিম্ব উৎপাদন করা হয় ওষুধের সাহায্যে, তাদের জরায়ুর প্রকৃতি ঐ মাসিক চক্রে স্বাভাবিক থাকার সম্ভাবনা কম থাকে। সে কারণে ভ্রণ প্রতিস্থাপনের জন্য পরবর্তী স্বাভাবিক মাসিক চক্রের জন্য অপেক্ষা করা হয়। সব ভ্রণ অবশ্য কাজে লাগানো হয় না। গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে এদের গুণগত মান পরীক্ষা করে স্কোরিং করা হয়। ভ্রণে কোষের সংখ্যা যথাযথ বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধির গতির উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত ভ্রণ বাছাই করা হয়।

যদি সহায় হয় স্রষ্টা, তাহলে নিন সুচিকিৎসা। Bumrungrad international Hospital, Thailand. বিশ্বজুড়ে সুনামের সহিত বন্ধ্যাত্ব দূর করার মানসমপণ্য সুচিকিৎসা দিয়ে আসছে। পুরুষ, নারীর যে কারো কারণে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব– ১২ মাস নিয়মিত অরক্ষিত মিলনের পর গর্ভধারণে ব্যার্থ হলে বন্ধ্যাত্ব বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। অথবা ৬ মাস মহিলার বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে।

বন্ধ্যাত্বের কারণসমুহ মহিলাদের ক্ষেত্রেঃ
১. বয়সের বাড়া,
২. নিয়মিত ধুমপান,
৩. যৌন কর্মহীনতা, জন্মগত প্রজনন ট্যাক্টের অসুস্থতা,
৪. বড় জরায়ু ফাইব্রয়েড,
৫. ব্লক করা ফ্যালোপিয়ান টিউবস,
৬. পেল্ভিক আনুগত্য বা এন্ডমেট্রিসিস, ও
৭. প্রাথমিক ডিম্বাশয়ের অপ্রতুলতা বা অপর্যাপ্ত। আরও কিছু অসুখ আছে, যেমন: ওভারিয়ান চকলেট সিস্ট, এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে হতে পারে।অতিরিক্ত বা কম ওজনও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।

বন্ধ্যাত্বের কারণসমুহ পুরুষদের ক্ষেত্রেঃ
১. জন্মগতভাবে প্রজনন অসাভাবিক বা যৌন কর্মহীনতা,
২. জেনেটিক বা ক্রোমসোমাল অসুখ যাহা শুক্রানু উৎদপানে প্রভাবিত করে, কম বা শুন্য সংখ্যা,
৩. নির্দিষ্ট রাসায়নিকের এক্সপোজার,
৪. নিয়মিত ধুমপান,
৫. কিছু চিকৎসাশর্ত যা উররবরতাকে প্রভাবিত করে। প্রজনন অঙ্গে যক্ষ্মা।

আজকাল অনেকেই পেশাগত কারণে সন্তান ধারণে সময় নেন, সেটি এক এসময় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ক্ষেত্রে গর্ভধারণ বন্ধকরণ পদ্ধতিগুলিই বন্ধ্যাত সৃষ্টির উল্লেখ্যোগ্য কারণের একটি। যৌন সংক্রমণ বন্ধ্যাত্বের একটি প্রধান কারণ।

চিকিৎসা পন্থাঃ ১. ঔষধ, ২. সার্জারি ও ৩. সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি। গর্ভধারণের জন্য পরিকল্পনা।

প্রাক–গর্ভআবস্থা জেনেটিক পরীক্ষাঃ প্রাক–গর্ভআবস্থা জেনেটিক পরীক্ষার লক্ষ্য হলো আপনি কোন জেনেটিক রোগ বা ব্যাধির বাহক কিনা তা নির্ধরণ করা যা আপনার সন্তানের কাছে চলে যাওয়া পথ সুগমন হয়া। ৬০০ টির বেশি জিন পরীক্ষা করা যেতে পারে ও ৩০০টির বেশি রোগ শনাক্ত করা যেতে পারে। যার মধ্যে থালাসেমিয়া, ক্যান্সার হৃদরোগের মতন যা সাধারণ জনগনের মাঝে পাওয়া যায়।

কার জেনেটিক পরীক্ষা করা যেতে পারে:
১. পারিবারিক ইতিহাসসহ/বংশগত রোগ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন,
২. যার বন্ধত্যা সমস্যা,
৩. যাদের একাধিক গর্ভপাত হয়েছে,
৪. যাদের জনমগত ক্রটি বা উত্তরাধিকার সুত্রে কোন রোগ আছে, ও
৫. যাদের একটি সন্তান আছে যারা ১ বছরের পুর্বেই মারা গেছে।

জেনেটিক পরীক্ষা প্রকৃয়ার রক্ত বা লালা নমুনা সংগ্রহ ও ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়। ডিম হিমায়িতঃ ডিম ফ্রিজিং হলো ভবিৎষতে গর্ভধারণ করার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে কম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা।

যাদের ডিম ফ্রিজ করা উচিতঃ
১. যারা ভবিৎষতে গর্ভধারণের ইচ্ছে কিন্তু এখনো প্রস্তুতি নেয়নি।
২. যাদের রোগের কারণে জিবানু কোষগুলি সহজে ক্ষয় হয় যার মধ্যে অটমিউন রোগ যেমন, এস.এল.ই অথবা এন্ডোমেট্রিওসিস।
৩. যারা কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি বা ডিম্বাশয়ের সার্জারি বা মহিলা প্রজনন সিস্টেমের মতো জিবানু কোষগুলিকে প্রভাবিত করে এমন চিকিৎসার শিকার হয়েছেন।

ডিম হিমায়িত করার প্রক্রিয়াঃ
১. ডিম জমা করার পুর্বে একজন চিকিতসকের সাথে পরামর্শ,
২. মাসিক চক্রের ২য় বা ৩য় দিন থেকে শুরু করে পেটে ইনজেকশন দিয়ে ডিম্বোফোটন প্ররোচিত করা,
৩. ৩ বা ৪ বার ডাক্তারের কাছে গিয়ে ডিমের পরিমান বা সংখ্যা বা আকার পর্যবেক্ষন করা,
৪. পরিপক্ক ডিম পুররুদ্ধার করুন, যা কোন ব্যাথা ছাড়ায় যাহা ৩০ মিনিট সময় লাগবে।
৫. ডিমগুলি ল্যাব্রেটরিতে হিমায়িত করা হয়, দম্পত্তির গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

প্রজনন প্রযুক্তিঃ
১. IUI-আই.ইউ.আই (ইন্ট্রা জরায়ু ইনসেমিনেশন):- এর মধ্যে নারীর ডিম্বস্ফোটনের দিনে পুরুষের শুক্রাণু মহিলার জরায়ুতে প্রবেশ করানো জড়িত। মিষিক্তকরণের সাফল্য সেই চক্রের সময় ডিম্বানু এবং মানের উপর নির্ভর করে।
২. IVF- আই.ভি.এম ( ইন-ভিট্র ফারটিলাইজেশন): পুরুষের প্রায় ২০,০০০ শুক্রাণু একটি ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়, যা সবচেয়ে শক্তিশালী শুক্রাণুকে স্বাভাবিকভাবে ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে দেয়।
৩. ICSI-আই সি এস আই ( ইন্ট্রসাইটপ্পলাস্মিক স্পার্ম ইনজেকশন) ঃ ল্যাবে একটি উপযুক্ত-পরিপক্ক ডিম্বাণু একত্রিত করার জন্য স্বাস্থকর শুক্রাণু নির্বাচন করা হয়।

আই ভি এফঃ আইভিএফ সফলতা নির্ভর করে বয়সের উপর। ২৯ বছরের কম বয়সী রোগির জন্য ৬৭% হয়। ৩০-৩৪ বয়সে ৬৪% হয়। ৩৫-৩৯ বয়সে৭৩% হয়। ৩৮ এর বেশি বয়সীদের জন্য, ক্রোমোজম পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাভাবিক ক্রোমোজোম পাওয়া যায়, গর্ভাবস্থায় সাফল্যের হার প্রায় ৭০-৮০ ভাগ। (১টি ভ্রণ স্থানান্তরের জন্য।)

IVF-এর জন্য একজন রোগীর সর্বোচ্চ বয়স হয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করার সময়, তার স্বাস্থ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার ডিমের গুণমানও একটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক কারণ।

একটি মহিলার বয়স হিসাবে ডিমের গুণমান হ্রাস পায়; এর মানে তার ডিমে ক্রোমোসোমাল অস্বাভাবিকতা থাকার সম্ভাবনা বেশি। এটি পরবর্তী জীবনে গর্ভবতী হওয়া কঠিন করে তুলতে পারে, এমনকি IVF এর মাধ্যমেও।

আরেকটি কারণ যা IVF-এর জন্য সর্বাধিক বয়সকে প্রভাবিত করতে পারে তা হল মেনোপজ। যে মহিলারা আর ডিম্বস্ফোটন করেন না তারা আইভিএফের জন্য ডিম তৈরি করতে পারবেন না।

ভাল মানের ডিম বা ডিম না থাকলে, গর্ভাবস্থার জন্য যথেষ্ট সুস্থ একজন বয়স্ক মহিলা আইভিএফ-এর জন্য তার নিজের ডিম ব্যবহার করতে পারবেন না এবং উপযুক্ত প্রার্থী হতে পারবেন না।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজেই বাস। তাই সন্তান অতীব গুরুত্বপুর্ণ হেতু দুনিয়াতে। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাবে মানুষ। আর সন্তান কামনা স্বভাবিকই একটি গুরুত্বপুর্ণ চাওয়া।

তথ্যসুত্রঃ
১. Bumrungrad international Hospital, Thailand.
২. WIKIpedia.
৩.online.

মোঃ মজিবর রহমান
মার্কেটিং কো-অর্ডিনেটর।
বামরুনগ্রাড ইন্নটারন্যাশনাল হাসপাতাল, থাইল্যান্ড।

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ - মানিকগঞ্জ

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com