মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন (জাবরা বাজারের উত্তর-পশ্চিম কোণে) কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রকল্পের জায়গা ভরাটের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মাটি ব্যবসায়ী চক্র।
জাবরা ও পাশ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, পুরাতন মাটি ব্যবসায়ী মিরন মিয়া এবং বানিয়াজুরি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম চতুর ছেলে জনি দীর্ঘদিন যাবত দাপটের সঙ্গে কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাকা সেতু, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও পাশ্ববর্তী ফসলী জমি হুমকির মুখে ফেলে তারা কালিগঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, এই ড্রেজারের টাকা স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের অনেকের পকেটেই কমবেশি যায়। একারণে মিরন আর জনির ড্রেজারের বিষয়ে কেউ কোনো কথা বলেন না।
স্থানীয়রা আরো বলেন, ড্রেজার স্থায়ীভাবে বন্ধের বিষয়ে প্রশাসন যদি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে কোনদিনই নদীতে ড্রেজার চালানো সম্ভব নয়। প্রশাসনের লোকজন মাঝেমধ্যে ড্রেজারের পাইপ বিচ্ছিন্ন করেন। এটি লোক দেখানো অভিযান ছাড়া আর কিছুই নয়। এ পর্যন্ত কতজন ড্রেজার ব্যবসায়ীকে জেল জরিমানা করেছে প্রশাসন?
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বানিয়াজুরি ইউনিয়নের জাবরা ভূমি অফিসের পাশে কালিগঙ্গা নদীতে দুটি ড্রেজার বসিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ী মিরন মিয়া জানান, তিনি একাই ব্যবসা করেন। তার কোনো অংশীদার নেই। এর বেশি কিছু মোবাইল ফোনে বলা যাবে না বলে জানান মিরন।
অপর ড্রেজার ব্যবসায়ী জনী জানান, ড্রেজার ব্যবসার অংশীদার হিসেবে তার সঙ্গে সাদেক, রিপনসহ ৩/৪জন অংশীদার রয়েছে। ড্রেজার বিষয়ে তার কোনো অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ড্রেজারের বিষয়ে কি প্রশাসন কখনো কাউকে অনুমতি দেয়! মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন আসেন।
বানিয়াজুরি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মনির হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, নদীতে চলমান ড্রেজারের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। আপনার অফিসের বাইরে দাড়িয়ে উত্তরদিকে তাকালেই ড্রেজারের শব্দ শোনা এবং দেখা যায়, তাহলে এ বিষয়ে আপনি জানেন না কিভাবে প্রশ্নে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে তিনি ড্রেজার দুটো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এখন কি অবস্থায় আছে, এ বিষয়ে তিনি জানেন না।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাচনসহ বিশেষ কিছু কাজে ব্যস্ত থাকায় অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তবে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।