নরসিংদীর মনোহরদীতে জমিলা খাতুন (৮০) নামে এক বৃদ্ধা মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিরুদ্ধে।
গতকাল শনিবার ১২ আগস্ট বিকালে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠে। অভিযুক্ত মেয়ে খাদিজা আক্তার উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ফালুর স্ত্রী। বৃদ্ধা জমিলা খাতুন উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন মাঝির স্ত্রী। এক ছেলে দুই মেয়ে রেখে স্বামী মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর পূর্বে বাবা ও নানার দেয় জমি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে মেয়ে। কিছুদিন যেতে না যেতেই একমাত্র বড় ভাই আসাদুজ্জামানকে প্রতারণা করে সকল সম্পত্তি মা জমিলা খাতুনের কাছ থেকে লিখেয়ে নেয় দুই মেয়ে খাদিজা আক্তার ও তাসলিমা আক্তার। সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই মাকে গলায় রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে চালায় অমানবিক অত্যাচার।
প্রতিবেশী জালু মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, বৃদ্ধার চিৎকারে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃদ্ধার প্রতি এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদেরকে লাঠি-সোটা নিয়ে আসে মারতে খাদিজা। নিষ্ঠুর অত্যাচার দেখে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। নির্জন জঙ্গলায় বৃষ্টির মধ্যে বেঁধে রাখে ও মারপিট করে মাকে মেয়ে।প্রশাসনের কাছে তার দুই মেয়ের বিচার দাবি করি।
বৃদ্ধার ছেলে আসাদুজ্জামান বলেন, আমার মায়ের উপর নির্যাতন হচ্ছে তা আমি আগে জানতাম না। নির্যাতনের ঘটনা দেখে সঙ্গে সঙ্গে মাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি ও চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। আমার বোন খাদিজার সুখের কথা চিন্তা করে তার স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর জন্য দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা দেই। কিছুদিন পর জানতে পারি মায়ের সকল জমি আমার ছোট দুই বোন লিখে নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, টাকা চাইতে গেলে খাদিজা আমাকে মামলার হুমকি দেয় ও খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে। এই বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান আসাদুজ্জামান।
ঘটনার বিষয়ে জানতে খাদিজা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে খাদিজা বলেন, আমার মা পাগল তাই বেঁধে রাখি।ছোট মেয়ে তাসলিমা আক্তার বলেন, আমার মায়ের উপর এমন নির্যাতন হয় এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম এখন থেকে মায়ের খোঁজ-খবর নিবো।
রায়পুরা উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ বি এম মাহবুবুর রহমান দুলাল বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় হনে বিচারে মুখোমুখি করা হবে। পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।